শহরে ১২ ঘণ্টা, গ্রামে ৪ ঘণ্টা বিদু্যৎ সরবরাহ
বকশীগঞ্জে তীব্র লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন!
প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
জামালপুরের বকশীগঞ্জে ঘন ঘন লোডশেডিং আর তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। কবে নাগাদ বিদু্যৎ সমস্যার সমাধান হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন গ্রাহকরা।
তবে পিডিবি-পলস্নী বিদু্যত সমিতির মধ্যে লোড বৈষম্য দূর হলে লোডশেডিং কমবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। জানা গেছে, বকশীগঞ্জে পলস্নী বিদু্যতের চরম লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। ঘন ঘন লোডশেডিং আর তীব্র গরমে জনজীবনে হাঁসফাঁস নেমে এসেছে। প্রতিদিন ১৭ থেকে ২০ ঘণ্টা বিদু্যৎ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন সব পেশার মানুষ। এভাবে চলতে থাকলে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে সব খাতে।
পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির বকশীগঞ্জ জোনাল অফিসের আওতাধীন পলস্নী বিদু্যতের প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। ৯টি ফিডারে এসব গ্রাহককে সেবা দিয়ে থাকে পলস্নী বিদু্যৎ সমিতি। বকশীগঞ্জ পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির আওতায় প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াট বিদু্যতের চাহিদা রয়েছে, কিন্তু বিদু্যৎ সরবরাহে ঘাটতির কারণে প্রতিদিন বিদু্যৎ পাওয়া যাচ্ছে ৬ থেকে ৭ মেগাওয়াট, যা চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম।
এর মধ্যে শুধু পৌর শহরের ফিডার (বিদু্যৎ পরিচিতি লাইন) ছাড়া বাকি ফিডারগুলোতে মাঝে মাঝে বিদু্যৎ আসে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের রোগীরা রয়েছে চরম বিড়ম্বনায়। এতে শ্বাসকষ্ট রোগী, হাঁপানী রোগীদের নেবুলাইজার করতে সমস্যা হচ্ছে। তীব্র গরম ও চরম লোডিংয়ের কারণে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এছাড়াও বিদু্যৎ পর্যাপ্ত না থাকায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প চরম হুমকির মুখে রয়েছে। বিশেষ করে অটোরিকশা ও অটো ভ্যান চালকরা ব্যাটারিচালিত অটোগুলোতে পর্যাপ্ত চার্জ করতে না পারায় গাড়ি নিয়ে বের হতে পারছেন না।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পৌর শহরে গড়ে ১২ ঘণ্টা বিদু্যৎ সরবরাহ থাকলেও গ্রামাঞ্চলে ১৭ থেকে ২০ ঘণ্টা বিদু্যৎ পাওয়া যায় না। কখন বিদু্যৎ আসে আর কখন চলে যায় তা বলতে পারেন না গ্রামের মানুষগুলো। ফলে চলতি মওসুমের রোপা আমন চাষ নিয়ে কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। কৃষকরা মটর ব্যবহার করতে না পারায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় ইঞ্জিনচালিত শ্যালো মেশিন ব্যবহার শুরু করেছেন। এতে করে ফসলের উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। ফলে রোপা আমন চাষে অতিরিক্ত খরচ গুণতে হচ্ছে কৃষকদের।
ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ জানান, যেভাবে বিদু্যৎ সরবরাহ করা হচ্ছে তাতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র গরমের মধ্যে বিদু্যতের ঘন ঘন আসা যাওয়া অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। তাই দ্রম্নত এর সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। বকশীগঞ্জ পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির জোনাল অফিসের ডিজিএম জয় প্রকাশ নন্দী জানান, আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিদু্যতের সরবরাহ না থাকায় লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। বিদু্যতের উৎপাদন বাড়ানো ও বিদু্যৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে লোডশেডিং অনেকটায় কমে যাবে।