শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১

প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগরেরা

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
  ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা -যাযাদি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতিমা তৈরির ধুম পড়েছে। কারিগরদের দম ফেলার ফুসরৎ নেই। কয়েক দিন বাদেই প্রতিমার গায়ে পড়বে রঙের আঁচড়। তবে গত বছরের চেয়ে কমেছে মন্ডপের সংখ্যা।

উপজেলার পৌর এলাকার যুগোল কিশোর মন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এই মন্দিরের ভেতরে এখন শোভা পাচ্ছে ছোট-বড় প্রতিমা। বাঁশ-কাঠ আর কাদা মাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলো দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন সনাতন ধর্মের লোকজন। এরই মধ্যে মন্ডপের কাঠামো তৈরি এবং খড়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে মাটির কাজ। এরপর মাটির তৈরি প্রতিমায় রং তুলির কাজ করা হবে। শুক্রবার দুপুরে ওই মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী (কারিগর) রাজভর ও সোহাগী।

সারিয়াকান্দি পৌর বাজারের নয়ন রাজভর তার সহধর্মিণী সোহাগী রানী ১৭ বছর ধরেই প্রতিমা তৈরির সঙ্গে জড়িত। প্রতিমা বিক্রি করেই তাদের সংসার চলে। প্রতিটি প্রতিমা ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার অর্ডার পেয়েছেন। দুর্গাপূজা ছাড়াও তারা কালিপূজা, লক্ষ্ণীপূজা, সরস্বতী পূজা, জগৎ ধাত্রী পূজাসহ বিভিন্ন ধরনের পূজার প্রতিমা তৈরি করেন।

এ মৌসুমে তিনি ৩টি দুর্গাপূজার প্রতিমা সেট তৈরি করছেন। নয়ন রাজভর ও তার সহধর্মিণী সোহাগী সারা বছরই প্রতিমা তৈরির কাজ করেন। এসব প্রতিমা বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, ধুনট, গোবিন্দগঞ্জ এবং সারিয়াকান্দিতে তারা বিক্রি করেন।

নয়ন রাজভর জানান, প্রতিবছর তিনি ৬টিরও বেশি প্রতিমা তৈরির অর্ডার পান। এ বছর তিনি মাত্র ৩টি প্রতিমা তৈরির অর্ডার পেয়েছেন। তিনি বলেন, 'ছোটবেলা থেকেই প্রতিমা গড়ার কাজ খুবই পছন্দ করি। প্রায় ১৮ বছর আগে থেকে প্রতিমা গড়ার কাজ করছি। এখন আমার নেশা হয়ে গেছে। এ কাজে আমি খুবই আনন্দ পাই।'

সারিয়াকান্দি পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রভাত চন্দ্র সাহা বলেন, আগামী ৮ অক্টোবর মহাপঞ্চমী দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু। ১২ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব। ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজা থেকে মন্ডপে মন্ডপে বেজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাঁসার শব্দ।

গত বছর সারিয়াকান্দিতে ২৫টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে এ বছর দুর্গাপূজার মন্ডপের সংখ্যা কমেছে। এ পর্যন্ত এ বছর ২১টি পূজা মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। দেবীর আগমন পালকিতে ও প্রস্থান হবে ঘোড়ায় চড়ে।

তিনি আরও বলেন, 'যেহেতু কোনো দলীয় সরকার ক্ষমতায় নাই, তাই কোনো নেতাদের আর্থিক সহায়তা পাওয়ার কোনো আশা নাই। সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা প্রতিবার সব মন্দিরে করে থাকে, এবারও পাব এ রকম আশ্বাস আমরা পেয়েছি।'

সারিয়াকান্দি থানার ওসি (তদন্ত) জামিরুল ইসলাম বলেন, গত বছরগুলোর মতো সারিয়াকান্দিতে অনুষ্ঠিত সব দুর্গা মন্দিরের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান বলেন, উপজেলার যে সব মন্দিরে পূজা উদযাপন হবে সেসব মন্দিরে বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে। এছাড়াও মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে