ছাত্র-জনতা অভু্যত্থান

জামালকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল পুরো পরিবার

প্রকাশ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
জামাল ভূইয়া

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নের খাসমহলের বাসিন্দা জামাল ভূইয়া। পরিবারের সবাই ডাকতেন শাহজামাল বলে। মৃত হারুল ভূইয়া ও মেহের জান দম্পতির ছয় ছেলেমেয়ের মধ্যে জামাল ভূইয়া ছিলেন সবার ছোট। ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পরিবার ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমান বছর দুয়েক আগে। ভাগ্য বদলের চেষ্টায় বড় দুই ভাইয়ের সঙ্গে নিজের সম্বলটুকুকে পুঁজি করে যোগ দেয় পোল্ট্রি মুরগির ব্যবসায়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন ঠিকই কিন্তু নিজে ফিরলেন কফিনবন্দি হয়ে। গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তথা ছাত্র-জনতার অভু্যত্থান চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী জামাল। নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ফরজ আলী চেয়ারম্যান মার্কেট এলাকায় তাদের পোল্ট্রি মুরগির দোকানে ঐদিন বিকালে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। নিজেদের পোল্ট্রি মুরগির দোকানে ক্যাশ কাউন্টারের পাশে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়েছিলেন জামাল। চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী এক হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃতু্য হয় তার। নিহত জামাল দুই ভাইয়ের সঙ্গে দেখাশোনা করতেন পোল্ট্রি মুরগির ব্যবসা। এক ভাই গ্রামের বাড়িতে গেলে অপর দুইভাই সামলাতেন ব্যবসা। কখনোই বন্ধ হয়ে থাকতো না তাদের দোকান। যার কারণে তিন ভাইয়ের ব্যবসা চলছিল বেশ ভালোভাবেই। সাত মাসের অবুঝ শিশু আবদুলস্নাহ যে পিতা হারিয়েছেন সে খবর হয়তো পৌঁছায়নি তার কাছে কিন্তু স্বামী হারানোর বেদনায় দিশেহারা জামালের স্ত্রী। অন্যদিকে পুত্র হারানোর শোকে মায়ের আহাজারি যেন থামছে না কোনোভাবেই। আদরের ছোট ছেলে জামালের স্মৃতি চোখে ভাসিয়ে অনবরত চলছে মা মেহেরজানের আর্তনাদ। নিহত জামালের বড় ভাই আলমাছ ভূইয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, 'স্বৈরাচারী সরকার পতন হয়েছে, এ জাতি নতুন করে স্বাধীন দেশ পেয়েছে কিন্তু আমি তো আমার ভাইকে আর পাব না। আমি চিরদিনের জন্য আমার জোরের ভাই হারিয়েছি, কষ্টে আমার বুক ফেটে যায়। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, 'আমার ভাই যে চেয়ারটায় বসতো আমার পাশেই চেয়ারটা পড়ে আছে কিন্তু আমার ভাই কবরে শুয়ে আছে। মনে হচ্ছে আমার পাশে এখনো ভাই বসে আছে। ও তো কোনো দোষ করে নাই, ওরে কেন মারল!