রোববার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১
জাতীয় গ্রিডের বিদু্যতের টাওয়ার বিলীন

পদ্মার ভাঙনে হুমকির মুখে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
  ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা -যাযাদি

পদ্মার ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক। ভাঙন অব্যাহত থাকলে যে কোনো মুহূর্তে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ। কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক থেকে নদী মাত্র ৫০ মিটার দূরে আছে। সড়কটি যে কোনো সময় ভাঙনের কবলে পড়তে পারে।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল, মসলেমপুর ও মুন্সিপাড়ায় পদ্মা নদীর ভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে প্রায়ই অবরোধ করে এলাকাবাসী। ইতোমধ্যে পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে বিদু্যতের জাতীয় গ্রিডের একটি টাওয়ার।

বৃহস্পতিবার উপজেলার সাহেবনগর এলাকায় জাতীয় গ্রিডের একটি টাওয়ার পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে। দুই মিনিটের ভেতর জাতীয় গ্রিডের একটি টাওয়ার মুচড়া পড়ে। এদিকে টাওয়ার ভাঙার পরপরই কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করেন গ্রামবাসী।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের মতো এবারও পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়েছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার ১টি ও মিরপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন। চরম আতঙ্কে দিন কাটছে এলাকার হাজারো মানুষের। গত এক মাসে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে কয়েক শত একর ফসলি জমি।

ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ৩টি গ্রাম পদ্মাপাড়ের মানুষ আতংকে মধ্যে দিনযাপন করছে। প্রমত্তা পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক হুমকির মুখে রয়েছে। ভাঙনে কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, রাস্তা, ইটভাটা ও বাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

কৃষক হাসান আলি বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে তার বাড়ির সামনেই পদ্মা নদীর ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের একটি টাওয়ার নদীতে ভেঙে পড়ে। হুমকির মুখে আছে নদী তীরবর্তী বসতবাড়ি, ফসলি জমি, কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কসহ বিদু্যতের আরও কয়েকটি টাওয়ার।

কুষ্টিয়ার বটতৈল গ্রিডের প্রকৌশলী আবু তালেব বলেন, ভেঙে পড়া টাওয়ারে কয়েক দিন আগে থেকেই বিদু্যৎ সঞ্চালন বন্ধ ছিল। এই লাইন দিয়ে ভেড়ামারা থেকে ফরিদপুরে বিদু্যৎ আনা-নেওয়া হয়। ভেঙে পড়ায় বিদু্যৎ সঞ্চালনে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। বিকল্প লাইনে বিদু্যৎ সরবরাহ স্বাভাবিক আছে।

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিদিন নদী ভাঙন হচ্ছে এটা সত্য। প্রায় দিনই সেখানে আন্দোলন হচ্ছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, 'জিও ব্যাগ ও টিউব ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হবে। এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে। টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি ২-৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ওই এলাকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে। আমরা ব্যাপারটি অবজারভেশনের মধ্যে রেখেছি। কয়েকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।'

রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্রের ৫০০ মিটার গ্রোয়েন (বাঁধ) নদীর মধ্যে আছে। সেখানে পানি বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অপর পাড়ে ভাঙছে। এমনটাই ধারণা করছেন এলাকাবাসী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে