শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখের স্মারক নং-৩৭.০০.০০০০.০৭৯.১১.০৮১.২৩-২৭৪ মোতাবেক রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩ এর ১২ (২) ধারা অনুযায়ী প্রফেসর (অবসরপ্রাপ্ত) ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে সাময়িকভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। নবনিযুক্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার ১৯ সেপ্টেম্বর চবি উপাচার্য দপ্তরে উপাচার্য পদে যোগদান করেন। এ সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে. এম. নুর আহমদসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষক-গবেষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৯ সালে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলু থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে দ্বিতীয় এমএ ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার ১৯৭৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৮১ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৭৪ সালে খুলনা এম. এম. সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ১৯৭২ সালে খুলনা সেন্ট জোসেফ্স হাই স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাস করেন।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার ১৯৮২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে তার শিক্ষকতা জীবন শুরু হয়। তিনি ১৯৯৯ সালে একই বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে পরবর্তীতে গ্রেড-১ অধ্যাপকে উন্নীত হন এবং ২০২২ সালের অক্টোবরে অবসরে যান। ৪০ বছরের শিক্ষকতা জীবনে তিনি ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি এবং ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওই বিভাগের সেল্ফ এ্যাসেসমেন্ট কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতারের গবেষণার মূল ক্ষেত্রসমূহের মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি, নির্বাচন, বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনীতি, উচ্চশিক্ষা, রাজনৈতিক সংস্কৃতি, লোকপ্রশাসন এবং ধর্ম। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গবেষণা জার্নালে তার গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ প্রকাশ পেয়েছে। এ কৃতি শিক্ষক-গবেষকের উলেস্নখযোগ্য গবেষণাকর্মের মধ্যে ২টি থিসিস পেপার, ২১টি গ্রন্থ, ১টি মনোগ্রাফ, ৪টি বুক চ্যাপ্টার, ৯টি গবেষণামূলক আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশনা, ১৫টি দেশীয় জার্নালে গবেষণামূলক প্রকাশনাসহ ১টি রিসার্চ নোট ও ১টি রিসার্চ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া ২৫ বছর ধরে তার জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় বিভিন্ন বিষয়ে অসংখ্য প্রবন্ধ ও কলাম প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়াও তিনি দেশের সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নিয়মিত টিভি প্রোগ্রামের 'টক শো'-তে অংশ গ্রহণ করেন।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার একাডেমিক কাজের পাশাপাশি সামাজিক ও গবেষণামূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সফঙ্গ সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর সদস্য (২০০০-বর্তমান), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য (২০০৫-২০১১), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির (সিইউডিএস) উপদেষ্টা (২০০৮-২০১২), ইয়ুথ ফোরাম ফর ডেমোক্র্যাসির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা (২০০৪-২০০৫), চট্টগ্রাম এসওএস চিলড্রেন ভিলেজ-এর লোকাল সাপোর্ট কমিটির সদস্য (২০১১-২০১৪), বাংলাদেশ জাতীয় তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট (২০২০-২০২১) এর উপদেষ্টা, বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতির নির্বাহী কমিটির সদস্য (১৯৯৩-২০০৩), বাংলাদেশ পলিটিক্যাল স্টাডিজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী সম্পাদক (২০০০-২০০৩), বাংলাদেশ পলিটিক্যাল স্টাডিজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পাদক (২০২০-২০২১), রিসার্চ সোসাইটি অব বাংলাদেশ, চট্টগ্রামের যুগ্ম মহাসচিব (২০০৪-২০০৬), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির শিক্ষা, গবেষণা ও প্রকাশনা কমিটির সদস্য (২০০৩-২০০৪ ও ২০০৬-২০০৭), দি চিটাগাং ইউনিভার্সিটি জার্নাল অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের সম্পাদনা কমিটির সদস্য (২০১০-২০১১ ও ২০১৯-২০২০), চবি একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য (১৯৯৯-২০২২), চবি বোর্ড অব এ্যাডভান্স স্টাডিজের সদস্য (১৯৯৯-২০২২) এবং খুলনা ইউনেস্কো ক্লাবের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতারের এওয়ার্ড, স্কলারশিপ এবং ফেলোশিপসমূহের মধ্যে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর সিনিয়র রিসার্র্চ ফেলো (২০০৫-২০০৬), যুক্তরাষ্ট্র সরকারের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটরস প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ (সেপ্টেম্বর ২০২২), অস্ট্রেলিয়া সরকারের ওভারসিস পোস্টগ্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপ (১৯৯৪-৯৯), অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি পোস্ট গ্রেজুয়েট রিসার্চ এওয়ার্ড (১৯৯৪-৯৯), কানাডার ইউনিভাসিটি অব ওয়াটারলু-এর রিসার্চ অ্যাসিস্টেন্টশিপ (১৯৮৮-১৯৮৯) এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্টস ফ্যাকাল্টি মেরিট স্কলারশিপ (১৯৮৮-১৯৮৯)সহ বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেরিট স্কলারশিপ (১৯৮০-৮১) উলেস্নখযোগ্য।
এছাড়াও ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট সেন্টারে উচ্চশিক্ষা অফিসার, ১৯৯৭, ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে স্টুডেন্ট রেকর্ড, এনরোলমেন্ট অফিসার এবং ১৯৯৪ ও ১৯৯৫ সালে সেন্ট্রাল রেকর্ড অফিসারের এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার, ১৯৯২ সালে ডেনিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিতে (ডানিডা) রিসার্চ প্রজেক্টের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট এবং ১৯৮৮ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত কানাডার ইউনিভাসিটি অব ওয়াটারলু-এর রাষ্ট্র্রবিজ্ঞান বিভাগের রিসার্চ অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনের মধ্য দিয়ে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতারের কর্মজীবনে যুক্ত হয়েছে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে অতিরিক্ত অভিজ্ঞতা।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার ২৮ অক্টোবর ১৯৫৭ সালে ঢাকায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি দুই সন্তানের জনক। তার মূল আগ্রহের বিষয় শিক্ষকতা এবং গবেষণা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি