মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না হয়েও ভুয়া সনদে পরিবার কল্যাণ সহকারীর চাকরি
প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না হয়েও ভুয়া সনদে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে মোছা. ফিদা হক ওরফে পিচ্ছি নামে এক নারী গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে ৩/খ ইউনিটে ৬ বছর ধরে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক, রংপুর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, গাইবান্ধা সদর থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জের ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের রাজিবপুর গ্রামের গরিব অসহায় ফিদা হক পিচ্ছিকে (৮) তার বাবা কাজের মেয়ে হিসেবে সদর উপজেলার পূর্ব কোমরনই নিউ কদমতলির বীর মুক্তিযোদ্ধা মেহেরুল ইসলাম মন্ডলের বাড়িতে রেখে যান। এরপর ফিদার বাবা মারা গেলে সে ওই বাড়িতেই থেকে কাজের মেয়ে হিসেবে কাজ করে এবং লেখাপড়া করতে থাকেন। এদিকে মেহেরুল গুরুতর অসুস্থ থাকার কারণে ফিদা পিচ্ছি স্কুল-কলেজে তার নিজের বাবার স্থলে পিতা হিসেবে মেহেরুলের নাম উলেস্নখ করেন। পরে সে কারিগরি শিক্ষাবোর্ড থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন এবং ভোটার আইডি কার্ডে ফিদা পিচ্ছি সেখানেও পিতা হিসেবে মেহেরুলের নাম ব্যবহার করেন। এরপর ফিদা সুকৌশলে মেহেরুলের আইডি কার্ড, মুক্তিযোদ্ধার সনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র চাকরির আবেদনের সঙ্গে দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে ৩/খ ইউনিটে চাকরি নেন। পরে তার প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে শহরের সুন্দরজান মোড় এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। এছাড়া গত ৫ সেপ্টেম্বর ফিদা পিচ্ছি ফোন করে মেহেরুলের মুক্তিযোদ্ধার মূল আইডি কার্ড চান ও সন্তান পরিচয় দিয়ে সম্পত্তির দাবি করেন। এতে মেহেরুল মুক্তিযোদ্ধা কার্ড ও সম্পত্তির ভাগ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যাসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছেন। মেহেরুলের মুক্তিযোদ্ধা সনদ নং ০১৩২০০০২২২৫, সাময়িক সনদপত্র নং ম-৬১৫৫০, লাল মুক্তিবার্তা ০৩১৭০১০১১৬, বেসামরিক গেজেট-৩৫, মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা ৪১৭৬৬। মেহেরুল বর্তমানে জেলা শহরের জিগজাগ রোডের মাস্টারপাড়ায় বসবাস করেন। এ ব্যাপারে ফিদা হক পিচ্ছির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, 'আমার বাবা মারা যাওয়ার কারণে পালিত বাবা-মা আমাকে লেখাপড়া করিয়েছেন। ফলে পিতার নাম হিসেবে সার্টিফিকেটে তাদের নাম উলেস্নখ করছি এবং তারাই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমাকে চাকরি নিয়ে দিয়েছেন। এতে আমার কোনো দোষ নেই।'