শিক্ষক লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
ঢাকায় প্রকল্প কর্মচারীদের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় মানববন্ধন ও পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন দেশের বিভিন্ন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আঞ্চলিক অফিস, স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত খবর- বরিশাল অফিস জানায়, বরিশাল নগরীর সদর রোডে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে নগরীর বিভিন্ন সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা বলেন, সরকার মাধ্যমিক উপবৃত্তি প্রকল্পে অস্থায়ী ভিত্তিতে কিছু কর্মচারী নিয়োগ দেয়। মেয়াদান্তে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা থাকলেও তা না করে রাজনৈতিক বিবেচনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বানানো হয়। তারা সরাসরি ৬ষ্ট গ্রেডে পদ দখলের পাঁয়তারা করছে। এসবের প্রতিবাদে মঙ্গলবার ঢাকায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে কিছু শিক্ষক অবস্থান নিলে তাদের ওপর হামলা চালায় প্রকল্পের ওইসব কর্মচারীরা। ওই হামলার প্রতিবাদে সারাদেশের মতো বরিশালেও এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। বক্তারা মেয়াদ শেষ হওয়া ওই প্রকল্পের কর্মচারীদের অব্যাহতি দাবি করেন। মানববন্ধনে বরিশাল জিলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিতা রাণী হালদারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) নাজমা খানম, সহকারী প্রধান শিক্ষক রেহেনা বেগম, বরিশাল জিলা স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মাহমুদ হোসেন, বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি বরিশাল অঞ্চলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ. রাজ্জাক ও শিক্ষক নেতা রিজবী হোসেন খান প্রমুখ। স্টাফ রিপোর্টার, ভোলা জানান, ভোলা প্রেস ক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচি পালন করেন ভোলা বৈষম্যবিরোধী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, উপবৃত্তি প্রকল্প থেকে মানবিক বিবেচনায় রাজস্ব খাতে আসা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা অযৌত্তিক দাবি নিয়ে গতকাল শিক্ষা ভবন ঘেরাও এবং অবস্থান কর্মসূচি করেন। এসময় ওই ভবনে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায় তারা। এই হামলার প্রতিবাদ ও হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে সারাদেশের মতো ভোলার ৯টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি রেখে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি আমরা। আমরা দ্রম্নত হামলাকারীদের শাস্তির দাবি করছি।' এ সময় বক্তব্য রাখেন, ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল রহিম, সারমিন জাহান শ্যামলি, শেখ আবু তালেব ও মিজানুর রহমান প্রমুখ। দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোনার দুর্গাপুরে মানববন্ধন করেছে দুইটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনার দুর্গাপুর প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ঢাকায় শিক্ষা ভবনের সামনে ৩৫তম থেকে ৪১তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে সরকারি বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া ২০-২৫ জন সহকারী শিক্ষকদের ওপর হামলা চালান সেসিপ প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের আইনের আওতায় এনে চাকরিবিধি অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। এছাড়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বকেয়া টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও পদোন্নতি বঞ্চিতদের পদোন্নতি, আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, দ্রম্নত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে পদায়ন করার জন্য জোর দাবি জানানো হয়। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র শিক্ষক অপর্না রানী সরকার, সালাউদ্দিন কাদের, সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম রিপন, বিলস্নাল হোসেন প্রমুখ। মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষকদের উদ্যোগে নিজ নিজ স্কুল প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমানের এবং সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক তৌফিক রহমানের নেতৃত্বে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সিদ্দীকুর রহমান, সাইদুর রহমান, সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন, মেহেরপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুস সালাম, সাইফুল ইসলাম, খালেকুজ্জামান, আবু হানিফ, সাদ্দাম হোসেন, তারিক আজিজ, মাহফুজুর রহমান প্রমুখ। চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারের চকরিয়ার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও মানববন্ধন করেছে দুই সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বুধবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া পৌরশহরের চিরিঙ্গায় এ মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, চকরিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ উদ্দিন, চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম মোস্তফা, সহকারী প্রধান শিক্ষক পান্না বড়ুয়া ও সিনিয়র শিক্ষক জিএএম এনামুল হক ও সহকারী শিক্ষক সেলিম উলস্নাহ। বক্তারা বলেন, মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রকল্পভুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কর্তৃক সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় সম্পৃক্তদের আইনের আওতায় এনে বিচার ও শস্তি দাবি করছি। বিগত ২০২১ সালে সরকার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে ৫০% উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান জারি করে। এটা বাস্তবায়নের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষকরা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করলে প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়োগকৃত শিক্ষা কর্মকর্তারা হামলা চালায়। বিষয়টি ন্যক্কারজনক। অপরদিকে প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়োগকৃতদের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে রাজস্ব খাতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না মর্মে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশনা রয়েছে বলে বক্তারা দাবি করেন। এ সময় দুই সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি জানান, ময়মনসিংহ গফরগাঁওয়ে বুধবার বিকালে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষকরা। পৌর শহরের খায়রুলস্নাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সড়কে গফরগাঁও ইসলামিয়া সরকারি হাইস্কুল ও খায়রুলস্নাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় যৌথভাবে আয়োজিত মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামিয়া সরকারি হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আফরোজা বানু, আজিজুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও খায়রুলস্নাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলহাস উদ্দিন, সিনিয়র শিক্ষক কবির আহাম্মেদ, মামুনুর রশিদ প্রমুখ।