ছাত্র-জনতার আন্দোলন

পুলিশের গুলিতে নিহত রমজানের বাবা-মায়ের দায়িত্ব নেবে কে

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

নাটোর প্রতিনিধি
সংসারে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের একমাত্র দায়িত্ববান ছিলেন রমজান আলী। গত ৫ আগস্ট সকালে বাইপাইলে মিছিলের মধ্যে গুলি লেগে আহত হন। দুপুরে এনাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রমজান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত রমজান আলীর (৩০) বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, 'এখন আমার আর ওর মায়ের দায়িত্ব তো কেউ নিচ্ছে না। ''দায়িত্ববান'' বলতে যা বোঝায় তা ছিল আমার ছেলে রমজান আলী। সংসারের হাল ধরার জন্য অল্প বয়সে সৌদি আরবে যায়। সেখেন থেকি দুইবছর পর আবার দেশে আসি ঢাকার বাইপাইলে মাছের আড়তে কাজ নিছে। হঠাৎ আন্দোলন শুরু হয়। আমার ছেলি দেশের কথা ভাবি মিছিল মিটিংয়ে যোগ দেয়। আর সেখেনেই গুলি খায়া জীবন দিলো।' সম্প্রতি তার সঙ্গে নাটোরের সিংড়া উপজেলার সাঐল হাজিপাড়ার নিজ বাড়িতে গিয়ে কথা হয়। সাংবাদিক আসার কথা শুনেই মা রোজুফা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়লেন। মা রোজুফা বেগম বলেন, 'সর্বশেষ গত রোজার ঈদে রমজান বাড়িতে আইছিল। গন্ডগোলের মধ্যেও ফোন করিছিল। বলিছিল, ''মা তোমাদের জন্য আমার যেমন দায়িত্ব আছে, দেশের জন্যও তেমনি দায়িত্ব আছে। আন্দোলন শেষ হলেই বাড়ি ফিরব।'' ছেলে আমার বাড়ি ফিরিছে। কিন্তু লাশ হয়ে।' পরিবার জানায়, আন্দোলনের এক মাস পেরুলেও একটি রাজনৈতিক দল ছাড়া আর কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি। চাঁদাতুলে তার দোয়ার অনুষ্ঠান হয়েছে। তবে স্থানীয়দের পরামর্শে বাবা নজরুল ছেলের মৃতু্য সনদ নিতে ঢাকায় গিয়ে সরকারের একজন উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, 'আপনার ছেলের রক্তের বিনিময়ে আজ আমি উপদেষ্টা। আমিসহ পুরো জাতি আপনার ছেলের কাছে ঋণী।' সিংড়ার ইউএনও হা-মীম তাবাসুম প্রভাব বলেন, 'খবর পেয়ে তাদের বাড়িতে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও আমি গিয়ে ৫০ হাজার টাকা নগদ অনুদান দিয়ে এসেছি। একই সঙ্গে তাদের যেকোনো প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য বলেছি।'