দরিদ্র পরিবারের সন্তান বিপস্নব হাসান (১৯)। বাবা বাবুল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করে পরিবারের হাল ধরেন বিপস্নব। দুই বোনের একজন অষ্টম ও অন্যজন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ২০ জুলাই ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার কলতাপাড়া বাজারে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সে।
উপার্জনক্ষম একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা। পুত্রশোক আর আর্থিক কষ্টে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা। কলতাপাড়া মোজাফফর আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন বিপস্নব। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর স্থানীয় ইউএনও ও বিএনপির নেতাকর্মীরা বিপস্নবের কবর জিয়ারত করেছেন, অনেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও আজও কোনো সহযোগিতা পায়নি পরিবারটি।
বিপস্নবের মা বিলকিস আক্তার বলেন, 'আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি কারখানায় চাকরি করে পরিবারের হাল ধরেছিল বিপস্নব। আমার দুই মেয়ে লেখাপড়া করছে, এখন সংসার ও তাদের লেখাপড়ার খরচ চালানো কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।' বাবা বাবুল মিয়া বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। কাজ করলে বুকে ব্যথা হয়। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। সরকারের সহযোগিতা চান। যারা তার সন্তানকে গুলি করে মেরেছে, তাদের শাস্তির দাবি করেন তিনি। ওইদিন তার সঙ্গে উপজেলার দামগাঁও গ্রামের নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিব (২১) ও কাউরাট গ্রামের জোবায়ের (২৮) নামের আরও দুইজন শহীদ হয়েছিলেন।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ বলেন, 'গত ২০ জুলাই গৌরীপুর কলতাপাড়া বাজারে নিহত তিনজনের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে নিহতদের পরিবার আর্থিক সহযোগিতা পাবে।'