সুন্দরবনে ফের বেপরোয়া বনদসু্য বাহিনী
প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি
সুন্দরবনে দীর্ঘদিন পর আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কলা গাছের মতো গজিয়ে ওঠা কয়েকটি বনদসু্য বাহিনী। এসব দসু্য বাহিনীর অত্যাচারে জেলে বাওয়ালিরা আতংকিত হয়ে পড়ছেন। এসব বাহিনী মাঝে মধ্যে ফ্রি স্টাইলে হামলা চালিয়ে জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করে চলেছে। এমনকি বাহিনীর টোকেন ছাড়া জেলেদের মৎস্য ও কাঁকড়া আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী জেলে বাওয়ালি সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনে প্রশাসনের একের পর এক অভিযানে প্রায় সব বনদসু্য বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। ফলে বেশ কয়েক বছর সুন্দরবন দসু্যমুক্ত থাকলেও সম্প্রতি আবারও পৃথক ৩টি গজিয়ে ওঠা বনদসু্য বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
বাহিনী ৩টি হলো- দাকোপের কালাবগির আছাবুর, কয়রার মাস্টার ও কালু বাহিনী। প্রত্যেক বাহিনীতে ৭ থেকে ৮ জন করে দসু্য সদস্য রয়েছে বলে জানা গেছে। পশ্চিম বন বিভাগের খুলনা রেঞ্জ এলাকায় এসব বাহিনীর সদস্য অধিকাংশ সময়ে বিচরণ করে থাকে। তবে বাহিনী ৩টির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেপরোয়া হয়েছে আছাবুর বাহিনী। আর এ বনদসু্য বাহিনী প্রায়ই জেলে নৌকায় অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের জাল, নৌকা, ডিজেল, চাল, ডাল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় মালামাল লুটে নিয়ে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করছে। মুক্তিপণ না দিয়ে কোনো জেলে বাড়ি ফিরতে পারছেন না বলে তাদের পরিবারের অভিযোগ। এমনকি ওই দসু্য বাহিনীর টোকেন ছাড়া বনের ওই এলাকায় জেলেদের মৎস্য ও কাঁকড়া আহরণ সম্ভব হচ্ছে না। আর টোকেনবিহীন জেলেদের অপহরণ করে জিম্মি রেখে আছাবুর বাহিনী মুক্তিপণ আদায় করছে বলে জানা গেছে।
ইতিমধ্যে কালাবগি এলাকার বেশ কয়েকজন অপহৃত জেলে আছাবুর বাহিনীর নির্ধারিত ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফেরেন। এ বাহিনীকে খাবারের বাজারসহ প্রয়োজনীয় মালামাল সরবরাহ করছে কালাবগি এলাকার ৪ থেকে ৫ জন কথিত জেলে ব্যবসায়ী। এসব বাহিনীর বেপরোয়া কর্মকান্ডে আতংকিত উপকূলীয় অঞ্চলের সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল হাজারো জেলে ও তাদের পরিবার। আপনজন হারানোর ভয়ে ভুক্তভোগী এসব পরিবার মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে সুতারখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির বলেন, 'সম্প্রতি সুন্দরবনে কয়েকটি বনদসু্য বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে আছাবুর বাহিনী। এ খবর জানার পর আমি প্রশাসনকে বিষয়টা জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।'
এ ব্যাপারে পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ জেড এম হাসানুর রহমান জানান, 'বনদসু্যর বিষয়ে আমি শুনেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'