খসে পড়েছে পলেস্তরা

কুলাউড়ায় ভয়ে স্কুলে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা!

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার রাঙ্গীছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার ২ বছরের মাথায় খসে পড়েছে ছাদের পলেস্তরা। এছাড়াও ভবনের একাধিক স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। পলেস্তারা মাথায় পড়ার ভয়ে স্কুলে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নেতারা, অভিভাবক ও এলাকাবাসী কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। জানা যায়, চাহিদাভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের (প্রথমপর্যায়) আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৮২ লাখ ২৫ হাজার ৩১২ টাকা ব্যয়ে শ্রীমঙ্গলের মেসার্স সেলিম কনস্ট্রাকশন নামীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ পায়। তড়িঘড়ি করে নির্মাণ কাজ শেষ করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যালয়ের ভবনটি কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেয়নি। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বছরখানেক থেকে নতুন ভবনের নিচতলায় দুটি ক্লাসরুম ও একটিতে অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু ২ বছর পেরোনোর আগেই ভবনের একাধিক স্থানে পলেস্তারা পড়ে যাওয়ায় ও ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেছে। তবে আতঙ্ক নিয়েই চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। নির্মাণ কাজের দুই বছরের মাথায় ভবনের এই দশা দেখে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন জানান, ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ে অনেক প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি চারতলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন পাই। কিন্তু কাজ শেষ হতে না হতেই নানা জায়গায় ফাটল ও পলেস্তারা পড়ে যাওয়াটা বলে দেয় কাজে কতটা অনিয়ম হয়েছে। অভিভাবক বদরুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, আজির মিয়া, ধনরাজ, চন্দ্র সাগর গোয়ালা, আকলিমা বেগম, রহিম মিয়া বলেন, বাচ্চারা অনেক আগ্রহ নিয়ে স্কুলে আসত। পলেস্তারা পড়ার বিষয়টি জানার পর থেকে তাদের মধ্যে ভয় কাজ করছে। স্কুলে আসতে চায় না। এ অবস্থায় বাচ্চাকে স্কুলে পাঠিয়ে মৃতু্যর মুখে ঠেলতে পারি না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশীল চন্দ্র দাস জানান, শুক্রবার বিকালে বারান্দার একটি অংশ থেকে পলেস্তারা পড়ার বিষয়টি দপ্তরি তাকে জানিয়েছেন। তিনি শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের অবগত করেন। প্রায় ২শ' ছাত্র-ছাত্রী এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। বর্তমানে দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়নের কারণে কিছু শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে আসছে। সবাই আতঙ্কে থাকে, 'কখন ওপর থেকে কিছু খসে পড়ে'। উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইফতেখার হোসেন ভূঞা জানান, বিষয়টি তিনি অবগত হয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানিয়েছেন। কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন আনোয়ার জানান, খবর পেয়েই তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। দ্রম্নত মেরামত করা হবে বলেও জানান তিনি। খোঁজ নিয়ে দ্রম্নত বিষয়টির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন।