গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে যাওয়ায় ২ দিন ধরে অন্ধকারে বেগমগঞ্জবাসী

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী
নোয়াখালীতে ঝড়ো বাতাসে গাছপালা উপড়ে পড়ে খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় ও সংযোগ তার ছিঁড়ে যাওয়ায় গত দুই দিন থেকে বিদু্যৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে অনেক এলাকা। এসব এলাকায় মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে না পারায় লোকজন প্রায় যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছেন। অনেকের ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আইপিএস'র চার্জও ফুরিয়ে যাওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ অন্ধকারে রাত পার করছেন। বেগমগঞ্জ উপজেলার উত্তর একলাশপুর গ্রামের ডাক্তার বাড়ির ছাদু মিয়া জানান, বাড়ির পাশে মাজার রোডে শুক্রবার রাতে একটি গাছ উপড়ে পড়ে বিদু্যতের খুঁটি কাত হয়ে তার ছিঁড়ে যায়। এরপর থেকে পুরো এলাকা বিদু্যৎ বিচ্ছিন্ন। বাড়িঘরে বন্যার পানি। এর ওপর বিদু্যৎ না থাকায় আমাদের কষ্টের সীমা নেই। অন্ধকারে এলাকাবাসীর মধ্যে চুরি ডাকাতির ভয় বেড়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, গাছ পড়ে তাল ছিঁড়ে যাওয়ার কথা পলস্নীবিদু্যৎ অফিসে জানানো হলেও রোববার দুপুর পর্যন্ত কেউ আসেনি। একই ইউনিয়নের মধ্য একলাশপুর গ্রামের মো. বাহার জানান, শুক্রবার রাতে চৌমুহনী-মাইজদী সড়কের পাশে গাছ পড়ে এলাকায় বিদু্যৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিষয়টি জানানোর পর রোববার দুপুরের বিদু্যৎ অফিসের লোকজন ঘটনাস্থলে আসে। তিনি বলেন, প্রায় তিন দিন এলাকায় বিদু্যৎ না থাকায় ফোনে চার্জ দিতে পারছেন না। যার কারণে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। নোয়াখালী পলস্নীবিদু্যৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, জেলায় পলস্নীবিদু্যতের গ্রাহক সংখ্যা মোট ৭ লাখ ৭৬ হাজার। এর মধ্যে রোববার পর্যন্ত ৫ লাখ গ্রাহক বিদু্যৎসেবা পাচ্ছেন। বাকি ২ লাখ ৭৬ হাজার গ্রাহক এখনো বিদু্যৎসেবা পাচ্ছেন না। এমন অনেক এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়ে বিদু্যতের খুঁটি ও তার ছিঁড়ে গেছে, যেখানে বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতিতে বিদু্যৎ অফিসের লোকজন কাজ করতে পারছেন না। এরপরও সার্বক্ষণিক ছেঁড়া তার মেরামত করে বিদু্যৎ সংযোগ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে গত দুই দিনের বৃষ্টিতে জেলায বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেলায় নতুন করে আরও এক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসার জাহিদ হাসান খান জানিয়েছেন, রোববার পর্যন্ত নোয়াখালীর ৮ উপজেলায় ১২ লাখ ৬৫ হাজার ৩০০ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এ ছাড়া ৩২৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৪০ লাখ ৬৬৮ জন মানুষ। জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, শনিবার দুপুর ১২টা থেকে রোববার বেলা ১২ পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ৪১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।