শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

জনবল সংকটে শিবালয় স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ
শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
জনবল সংকটে শিবালয় স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে দীর্ঘ দিন ধরে আরএমও, পরিবার পরিকল্পনা ও গাইনি বিভাগের ডাক্তারসহ বিভিন্ন পদে ডাক্তার না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা সেবা না পাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা জামাল উদ্দিন জানান, শনিবার শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া চরাঞ্চলের সাহেলা আক্তার নামের এক নারী সিজার হওয়ার জন্য এই স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে আসেন। গাইনি বিভাগে কোনো ডাক্তার না থাকায় তাকে মানিকগঞ্জ নিয়ে যাওয়া হয়।

উপজেলার রুপসা থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা বিলস্নাল হোসেন বলেন, তার পায়ে ফোঁড়া অপারেশন হওয়ার জন্য আসেন স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে। সার্জারি বিভাগে কোনো ডাক্তার না থাকায় সে অপারেশন হতে পারেননি। এ রকম এই হাসাতালে বিভিন্ন পদে ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসাসেবা নিতে আসা হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

ওই হাসপাতালের অফিস সহকারী খোরদেশ আলম জানান, এই হাসপাতালে ৬ জন ডাক্তারের মধ্যে মাত্র তিনজন ডাক্তার দিয়ে কোনোমতে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। গত ২০ আগস্ট হতে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কপেস্নক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডাক্তার নেই। ওইদিন থেকেই প্রধান অফিস সহকারী চলে গেছেন। এই স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে দীর্ঘ দিন ধরে আরএমও নেই। এই স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে আ্যাম্বুলেন্সের ডাইভার থেকে শুরু করে গাইনি ডাক্তার, সার্জারি ডাক্তারসহ বিভিন্ন পদে প্রয়োজনীয় ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসাসেবা নিতে আসা অনেক রোগীরাই চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

উলেস্নখ্য, ২০১৫ সালের ২৫ জুন ৩১ শষ্যার স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সটিকে ৫০ শষ্যায় উন্নিত করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ওই হাসপাতালে শীত মৌসুমে গড়ে ৬০-৭০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। গরমের সময় ৮০-৯০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। আর বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নেন প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০-৫০০ রোগী। এই স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সটি ৫০ শষ্যায় উন্নীত করার পর ২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট অতিরিক্ত ১৯ শষ্যার মূল ভবনসহ ডরমিটরি ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

এ ছাড়া ডাক্তার, কনসালট্যান্ট, নার্স এবং তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য ডরমিটরি ভবন নির্মাণ করা হয়। ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের নির্মাণকাজ শেষে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বঙ্গ বিল্ডার্স লিমিটেড ২০১৫ সালের ২৫ জুন কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন ভবনগুলো বুঝে দেন।

কিন্তু ৫০ শষ্যার কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল, চিকিৎসার কাজে ব্যবহারের জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাম যন্ত্র, ইসিজি, মলমুত্র, এক্সে, রক্ত পরীক্ষার যন্ত্রসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও ওষুধপত্র বরাদ্দ দেওয়া হয়নি এখনো। প্রয়োজনীয় জনবল, চিকিৎসার যন্ত্রপাতি, ওষুধপত্রসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে ৫০ শষ্যার হাসপাতাল উন্নত হলেও রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছে না। ৫০ শষ্যার হাসপাতালটির জন্য প্রয়োজন ২৪ জন ডাক্তারের। কিন্তু রয়েছে মাত্র ৩ জন ডাক্তার। এই হাসপাতালে শিশু বিভাগ, পঙ্গু বিভাগ, অর্থ্রপেডিক বিভাগ, চক্ষু বিভাগ ও ডেন্টাল বিভাগের ডাক্তার নেই।

মাকিগঞ্জের সির্ভিল সার্জন ডা. মকছেদুল মোমিন বলেন, উপজেলার হাসপাতালটি ৫০ শষ্যায় উন্নীত করা হলেও জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। জনবল, যন্ত্রপাতি ও ওষুধপত্র পাওয়া গেলে হাসপাতালটিতে সমস্যা থাকবে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে হাসপাতালের চাহিদা প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখনো ৩১ শয্যার হাসপাতালের মতো চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে