নওগাঁর আত্রাইয়ের বিভিন্ন মাঠ থেকে বন্যার পানি কমে যাওয়ায় শঙ্কিত কৃষকরা আমন ধানের নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। মাঠে মাঠে চলছে আমন ধান রোপণের ব্যাপক প্রস্তুতি। কোথাও জমি চাষ, কোথাও বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন, আবার কোথাও রোপণ- এ নিয়ে এলাকার কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জানা যায়, এবার উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হচ্ছে আরও বেশি। ইতোমধ্যেই প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। বন্যা আতঙ্কের কারণে আমন চাষে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে উপজেলার কৃষকরা জানিয়েছেন।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, উপজেলার ৮ ইউনিয়নের মধ্যে শাহাগোলা, মনিয়ারী ও ভোঁপাড়া ইউনিয়নে সর্বাধিক পরিমাণ জমিতে আন ধানের চাষ হয়ে থাকে। এ ছাড়া অন্যান্য ইউনিয়নের উঁচু জমিগুলোতে আমন ধানের চাষ করেন কৃষকরা। এসব এলাকার মাঠগুলোতে চাষকৃত আমন ধানের মধ্যে পায়জাম, জিরাসাইল, ব্রি-২৯সহ উচ্চ ফলনশীল অনেক জাতের হাইব্রিড ধানেরও চাষ হয়ে থাকে। এর সঙ্গে গত কয়েক বছর থেকে যোগ হয়েছে সুঘ্রাণের চিনি আতপ ধানের চাষ।।
এদিকে মৌসুমের শুরুর দিকে অতিবর্ষণ ও রক্তদহ বিলের পানিতে শাহাগোলা, মনিয়ারী ও ভোঁপাড়া ইউনিয়নে বিভিন্ন মাঠ পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে কয়েক হাজার কৃষকের মধ্যে আমন চাষ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। সম্প্রতি এসব মাঠ থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় ওই কৃষকদের মধ্যে বইছে আনন্দের ঢেউ। তারা পুরোদমে আমন চাষে মাঠে নেমেছেন।
প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে এবারে উপজেলায় আমনে বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা আশা পোষণ করছেন। উপজেলার চৌথল গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, 'আমাদের মাঠ থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় আমরা পুরোদমে আমন ধানের চাষে মাঠে নেমেছি। অনেকের আমন ধান রোপণ শেষ হয়েছে।'
উপজেলা কৃষি অফিসার প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, 'কৃষকদের আমনচাষে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন সময় আমরা তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। সেই সঙ্গে সরকারিভাবে তাদের প্রণোদনাও দেওয়া হয়েছে। অল্প খরচে অধিক ফলন যাতে কৃষকরা পান এ জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি।'