আটঘরিয়ার শিম যাচ্ছে দেশ-বিদেশে

কালীগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষে সফল কৃষক

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষ করে সফল হয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। এদিকে, পাবনার আটঘরিয়ার চাষিরা দিন দিন লাভজনক শিমের আবাদে ঝুঁকছেন। এখানকার শত শত মণ শিম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিদেশেও। এ নিয়ে প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট- কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন স্থানীয় কৃষকরা। কাঁচা পেঁপে সবজি ও পাকা ফল হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় স্থানীয় বাজারসহ ঢাকার আশপাশে দিন দিন এর চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। তাই কৃষকদের অনেকেই এখন পেঁপে চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। পাইকাররা এখন বাগান থেকেই পেঁপে কিনছেন। যে কারণে কৃষকদের বাজারে নিয়ে যাওয়ার ঝামেলা থাকছে না। বরং যাতায়াত খরচ কমে যাওয়ার পাশাপাশি লাভের পরিমাণ বেড়েছে। উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের বির্তুল গ্রামের চলিস্নশোর্ধ কৃষক মাসুদ সরকার। গেল বছর তিনি কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে ১ বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করে লাভবান হয়েছেন। গত বছরের সফলতায় এ বছর আরও বেশি লাভের আশায় ৩ বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করেছেন। ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি দামও পাচ্ছেন বেশি। স্থানীয় বাজারসহ ঢাকার আশপাশে এই সবজি ও ফলের রয়েছে বেশ চাহিদা। তাই শুধু মাসুদ সরকারই নন। তার মতো একই গ্রামের যুবক রনি সরকার ও সম্রাট সরকার এই পেঁপে চাষ করছেন। স্থানীয় কৃষি অফিসের তথ্য বলছে, কালীগঞ্জ উপজেলায় গ্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ করা হয়েছে। উপজেলার নাগোরী ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পেঁপে চাষ হয়। স্থানীয় কয়েকজন জানান, পেঁপে চাষ করে সফলতা অর্জন করার পাশাপাশি তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। উপজেলার উলুখোলা বস্নকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনির উদ্দিন মোলস্না বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে পেঁপে চাষে বির্তুল গ্রামের কৃষকদের পরিবারে ফিরে এসেছে আর্থিক সচ্ছলতা। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, পেঁপে চাষে খরচ কম, রোগ বালাইয়ের ঝামেলা ও ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষ করে অনেকেই আর্থিকভাবে সচ্ছল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে পুষ্টিমান সমৃদ্ধ পেঁপে চাষে ভাগ্য বদলে ফেলা যায়। শিক্ষিত বেকার যুবকরা যদি চাষে অগ্রসর হয় তাহলে তারাও লাভবান হবে বলে। আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার পশ্চিম এলাকার অধিকাংশ কৃষকের লাভজনক অর্থকরী ফসল শিম। প্রতিবছর শত শত বিঘা জমিতে দেশি ও আগাম উন্নত জাতের শিম আবাদ করে কৃষকরা বেশি লাভবান হওয়ায় তাদের আগ্রহ বাড়ছে। ইতোমধ্যে আগাম জাতের শিম গাছে ফুল ধরতে শুরু করেছে। আসন্ন শীতের আগেই তা বাজারে উঠতে শুরু করবে। আগাম জাত হিসেবে ১ সপ্তাহ পর বাজারে শিম পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। পুরা মৌসুমে এখানকার শিম দেশের বিভিন্ন স্থান ও বিদেশেও রপ্তানি হয়ে থাকে। উলেস্নখ্য, আটঘরিয়া উপজেলার মাজপাড়া ইউনিয়ন শিমের জন্য বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। এছাড়া পাশের চাঁদভা ইউনিয়ন, দেবোত্তর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার অনেক কৃষক শিম আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘায় এক থেকে দেড় লাখ টাকার শিম বিক্রি হবে বলে মুনতাজ আলী নামের এক চাষি জানান। প্রচন্ড খড়া ও অতিবৃষ্টি না হলে এবার অনুকূল আবহাওয়ায় শিম চাষিরা বেশি লাভবান হবেন বলে তাদের আশা। তবে মাজপাড়া ও চাঁদভা ইউনিয়নে বেশি শিম আবাদ হয়ে থাকে। বর্তমানে মাঠ জুড়ে গাছগুলো ও ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। শিম চাষি ইউনুস জানান, শীতের আগে এই শিম উঠবে বলে দাম বেশি পাওয়া যাবে। দেড় মাস পর থেকে প্রায় ৫-৬ মাস ধরে এর ফলন পাওয়া যায়। এ সময় প্রতি কেজি শিম স্বাভাবিক বাজারে ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হয়। তবে প্রথম প্রথম ২০০ টাকা কেজিও যায়। প্রতি বিঘা খরচ ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, তবে শীত মৌসুমে খরচ কম। শিম চাষি হাবিব জানান, শিম চাষের উপকরণের কীটনাশক, সেচ, সার, বীজ এসবের অত্যাধিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। এছাড়াও শিমের পাইকারি আড়ৎ মুলাডলি, সরাবাড়িয়া, চাঁদভা, ধলেশ্বর এসব স্থানে পরিবহণ খরচ ও ফড়িয়া দালালের দৌরাত্ম্যে ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় না। এই এলাকা থেকে উঠতি মৌসুমে শত শত মণ শিম ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এমনকি দেশের বাইরেও রপ্তানি হয়ে থাকে।