ভারতীয় পানির ঢলে ফেনী জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় তছনছ হয়ে গেছে কৃষি ও কৃষকের স্বপ্ন। ভয়াবহ বন্যায় ফেনী জেলার মতো দাগনভূঞা উপজেলায় কৃষি সেক্টরে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। বন্যার পানিতে ডুবে উপজেলার শতশত কৃষি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। সর্বস্ব হারিয়ে ১৫ হাজার কৃষক পরিবার এখন নিঃস্ব। তারা এখন সরকারি সহায়তার জন্য পথ পানে চেয়ে রয়েছেন। বন্যার পানি কমলেও ক্ষত শুকায়নি কৃষকদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া ফসল। অনিশ্চিতায় দিন পার করছেন উপজেলা প্রান্তিক কৃষক পরিবার।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর উপজেলায় আমনের ৪৭৫ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে ক্ষতি হয়েছে ৪ কোটি ৩৭ লাখ ৫ হাজার টাকা, ২০৪ হেক্টর জমিতে রোপণকৃত আমনের জমি বন্যার পানিতে ডুবে ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি ৮৪ লাখ ৫ হাজার আটশ' টাকা এ নিয়ে আমনে ক্ষতির পরিমাণ ৬ কোটি ৮৮ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া ৮০ হেক্টর জমিতে কৃষকের রোপণকৃত শাকসবজি পানিতে ডুবে ক্ষতি হয়েছে পাঁচ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আট হেক্টর জমির ফল ও অন্য ফলফলাদির বাগান বন্যার পানিতে ডুবে ক্ষতি হয়েছে ৪৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া উপজেলার ০.৫০ হেক্টর জমিতে আবাদকৃত আদা বন্যার পানিতে ডুবে ক্ষতি হয়েছে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
উপজেলার ১৬৭ হেক্টর জমিতে আবাদকৃত আউসের জমি বন্যার পানিতে ডুবে দুই কোটি ৯৬ লাখ ছয় হাজার ৮৫০ টাকা ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে এ উপজেলায় কৃষি সেক্টরে ক্ষতি হয়েছে ১৫ কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার ৮৫০ টাকা।
উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের আলামপুর গ্রামের কৃষক সিরাজ মিয়া জানান, তার আমনের জমি ডুবে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। আমন মৌসুমের ধান দিয়ে তার পুরো বছরের সংসার চলে। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে বেঁচে থাকবেন সেই দুশ্চিন্তায় তার সময় কাটছে। সহযোগিতার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহিউদ্দিন মজুমদার জানান, 'স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় এই প্রথম উপজেলার ১৫ হাজার কৃষকপরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এছাড়া আগামী সপ্তাহে ক্ষতিগ্রস্তদের পারিবারিক পুষ্টি বাগানের সার বীজ ও নগদ টাকা করে প্রণোদনা দেওয়া হবে।