আজকের যায়যায়দিন

কুমিলস্নায় বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবার মৃতু্যর পর ভাতা বন্ধ করতে সৎ মা ও সৎ ভাইবোনরা মো. শফিক (৫২) নামের এক ব্যক্তির নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত শনিবার কুমিলস্না নগরীর একটি রেস্টুরেন্টের হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন শফিক। ভুক্তভোগী শফিক জেলার মুরাদনগর উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ ইউনিয়নের কালাডুমুর এলাকার মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলামের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তার বাবা মফিজুল ইসলাম একজন সেনাকর্মকর্তা ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। পরবর্তীতে তাকে সরকারিভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ হয়। এরপর থেকে তার বাবা নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে আসেন।

তিনি আরও বলেন, শফিকের বয়স যখন ৪ বছর তখন তার মায়ের সঙ্গে বাবার বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। ৪-৫ বছর পরে মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম আয়েশা বেগম নামের এক নারীকে বিয়ে করেন।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের রমজান মাসে মৃতু্যবরণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম। তার মৃতু্যর পর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিয়ে মুরাদনগর ইউএনও'র কাছে আবেদন করেন। ইউএনও সিফাত উদ্দিন উভয় পক্ষকে ডেকে কাগজপত্র যাচাই করে সৎ মা আয়েশা বেগম এবং শফিকের মধ্যে দুইভাগে বণ্টন হওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। গত আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে ভাতার ২০ হাজার টাকার অর্ধেক শফিকের ব্যাংক হিসাবে আসে।

এদিকে ভাতা বন্ধ করতে কিছুদিন আগে আদালতে শফিকের নামে মিথ্যা মামলা করেন সৎ মা আয়েশা। ওই মামলায় শফিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলামের ছেলে নয়, সে প্রতারণা করে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন, ভোটার আইডিসহ সব কাগজপত্র ভুয়া বানিয়ে মফিজুল ইসলামের ছেলে সেজেছেন বলে মামলায় উলেস্নখ করা হয়।

ভুক্তভোগী শফিক বলেন, আমার ডিএনএ করতে কোনো আপত্তি নেই। তবে আমি একজন খেটে খাওয়া মানুষ। আমার কাছে কোনো টাকা-পয়সা নেই। অন্যদিকে আমার সৎ মা আমার মৃত বাবার সব সম্পদ ভোগ করছেন। তাদের টাকা-পয়সার অভাব নেই। টাকা দিয়ে যদি ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল পাল্টে দেওয়া হয় তাহলে ন্যায় বিচার নিয়ে শঙ্কায় আছেন তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমিলস্না পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক মো. শামসুদ্দিন বলেন, 'মামলার পর আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সঠিক প্রতিবেদন আদালতে জমা দেব।'