আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানকে অফিসে বসিয়ে বহিষ্কার বিএনপি নেতা ভাগিনা!
প্রকাশ | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আওয়ামী লীগ শাসনামলে নির্বাচিত এক ইউপি চেয়ারম্যানকে চেয়ারে বসানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার দুই বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করেছে জেলা বিএনপি।
গত শুক্রবার সকালে বহিষ্কার আদেশের কপির মাধ্যমে বিষয়টি জানান জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান।
বহিষ্কৃত দুইজন হলেন, শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মশিউর রহমান নয়েছ এবং একই ইউনিয়নের নিজ মাওনা গ্রামের ভারত মৈশালের ছেলে ও ওই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএ গণি মৈশাল। পাশাপাশি তারা শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও কৃষি-বিষয়ক সম্পাদকের পদেও রয়েছেন।
সূত্র জানায়, ছাত্র আন্দোলনের ফলে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অবসানের পর কিছুদিন পরিষদে ঢুকতে পারেননি গাজীপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম মাতবর। পরে আপন ভাগিনা ও উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি মশিউর রহমান নয়েছ এবং উপজেলা বিএনপির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এমএ গণি মৈশালের উপস্থিতিতে গত ২০ আগস্ট পরিষদের চেয়ারে বসানো হয় ওই চেয়ারম্যানকে। এই আয়োজনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি জেলা বিএনপির নজরে আসে। ঘটনা যাচাই-বাছাই করে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, উপজেলা বিএনপির পক্ষে ওই দুই নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সবশেষ ৫ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমতিক্রমে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক সাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে ওই দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে শ্রীপুর উপজেলা আ'লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মাদবর এবং সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা বিএনপির কৃষি-বিষয়ক সম্পাদক ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএ গণি মৈশালের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা হয়নি।
উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মশিউর রহমান নয়েছ বলেন, 'চেয়ারম্যানকে চেয়ারে বসানোর ঘটনায় আমরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু কি কারণে উপস্থিত হয়েছি, তা খন্ডিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এরপরও দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, আমাদের গত ২৫ আগস্ট উপজেলা বিএনপি শোকজ করেছে। আমরা ২৬ আগস্ট শোকজের কাগজ হাতে পেয়েছি। সেটার জবাব ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার কথা। এখনো আরও দুই দিন বাকি। এরই মধ্যে জেলা থেকে আমাদের বহিষ্কার আদেশ দেওয়া হয়েছে।'
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ফকির বলেন, 'ইউনিয়ন বিএনপির ওই দুই নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জেলা বিএনপি আমাকে জানায়নি।'
গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান বলেন, 'শ্রীপুর উপজেলার ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, যা পত্রের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দলের যেকোনো ব্যক্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তাকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।'