শিবচরে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ ৯১ জন সাপে কাটা রোগী

আছে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম

প্রকাশ | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
দেশজুড়ে গত কয়েক মাস বিরাজ করছে সাপ আতঙ্ক। বিশেষ করে আলোচনায় রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া)। পদ্মা ও আড়িয়ালখাঁ নদ বেষ্টিত মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার চরাঞ্চল ও নদ-নদীর তীরবর্তী এলাকায় চলতি বছরের প্রথম থেকেই রাসেলস ভাইপার সাপের প্রকোপ দেখা দেয়। এতে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে গত তিন মাসে ৯২ জন সাপেকাটা রোগী ভর্তি হন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৯১ জন। চরাঞ্চলের রোগী অ্যান্টিভেনম প্রয়োগে সুস্থ হওয়ার পর সাপেকাটা অসংখ্য রোগী এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে আসছে। তথ্য বলছে, উপজেলায় সাপে কাটা রোগী বেড়েছে। মানুষও আতঙ্কিত। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, সময়মতো হাসপাতালে এলে রোগী বাঁচানো সম্ভব। অধিকাংশ রোগীই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। তাদের কাছে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুত আছে। শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স সূত্রে জানা যায়, গত তিন মাসে ৯২ জন সাপে কাটা রোগী ভর্তি হন। তাদের মধ্যে ১২ জন রোগী বিষধর সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। অ্যান্টিভেনম প্রয়োগে ১১ জন রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। ৯০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এবং গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এক রোগীকে হাসপাতালে আনার পরপরই মারা যান। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জুলাই পাট জাগ দিতে গিয়ে উপজেলার চরজানাজাত এলাকার কৃষক সুলতান বেপারী (৫০) রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। দ্রম্নত তাকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে আসে স্বজনরা। অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের পর রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। এরপর থেকে শিবচর ও আশপাশের এলাকার সাপের কামড়ে আহত রোগীরা আসতে শুরু করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে। গত ৭ জুলাই পদ্মা বেষ্টিত চরজানাজাত থেকে মমিন শেখ নামের এক ব্যক্তি বিষধর সাপের ছোবলে আক্রান্ত হন। পরে সাপসহ রোগীকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে আসেন স্বজনরা। একই দিন রাত ১টার দিকে উপজেলার বাঁশকান্দি এলাকা থেকে সাপের ছোবলে গুরুতর আহত সজীব হাওলাদার নামের এক যুবককে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। পরে তাদের অ্যান্টিভেনম প্রয়োগে তারা উভয়ই সুস্থ হন। পরবর্তী সময়ে আরও একাধিক রোগী অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ সুস্থ হয়ে উঠেন। সুলতান বেপারীসহ একাধিক রোগী জানান, শিবচর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২-৩ দিনের মধ্যেই অনেক রোগী সুস্থ হয়েছেন। এখন সাপে কাটলেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চলে আসেন আক্রান্তরা। আগে অনেকেই জানতো না হাসপাতালে সাপেকাটা রোগীর চিকিৎসা হয়। তাছাড়া আগে হাসপাতালে ততটা গুরুত্বও দিত না। বর্তমানে গুরুত্বসহকারে রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে। শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফাতিমা মাহজাবিন বলেন, আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম রয়েছে। শেষ হওয়ার আগেই আমরা চাহিদা দিয়ে থাকি। সাপে কাটা রোগীদের দ্রম্নত হাসপাতালে নিয়ে এলে যথাযথ চিকিৎসার মধ্য দিয়ে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।