শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কালিয়ায় অসময়ের তরমুজ চাষে সফলতা

কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধি
  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নড়াইলের কালিয়ায় মাছের ঘেরে মাচায় মাচায় ঝুলছে অসময়ে চাষ করা হলুদ, কালো বিভিন্ন ধরনের তরমুজ -যাযাদি

নড়াইলের কালিয়ায় বর্ষাকালীন হাইব্রিড জাতের অফ সিজন তরমুজ চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কম খরচে বেশি ফলন এবং দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান চাষিরা। তাদের সফলতা দেখে অসময়ের তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন অনেকেই। কৃষি বিভাগও হাইব্রিড জাতের তরমুজ আবাদে কৃষকদের পরামর্শ, বিনামূল্যে সার, বীজ, নগদ অর্থ সহায়তাসহ সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

কৃষি অফিস ও চাষিদের সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কালিয়া উপজেলায় দশ হেক্টর জমিতে বর্ষাকালীন তরমুজের চাষ হয়েছে। যা গত বছর থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষক ফলন আশা করছে হেক্টর প্রতি ১৫ টন। কালিয়া পৌরসভার ছোট কালিয়ার গোবিন্দনগর এলাকার বিলে, সালামাবাদ ইউনিয়নের ভাউরীর চর বিলে, বাঐসোনা ইউনিয়নের ডুটকুড়া বিলে আর উপজেলার অন্যতম বৃহৎ 'ভক্তডাঙ্গা' বিলের অসংখ্য মৎস্যঘেরের পাড়ে মাচায় মাচায় বিশেষ জাতের বারোমাসি তরমুজ আবাদ হয়েছে। এসব জাতের মধ্যে রয়েছে এশিয়ান-২, তৃপ্তি ও বস্নাক বেবি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এসবের মধ্যে এশিয়ান-২ বাংলাদেশি জাত। এসব জাতের তরমুজ দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। চাষে খরচ কম, একরপ্রতি মাত্র ১৫-২০ হাজার টাকা, কিন্তু বিক্রি হয় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। মাছের ঘেরে গেলে দেখা যায় মাচায় মাচায় ঝুলছে হলুদ, কালো বিভিন্ন ধরনের তরমুজ।

তরমুজ চাষে সফল জেলার নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কালিয়া উপজেলার ভাউরীর চরের বাসিন্দা শেখ কামাল হোসেন। তিনি জানান-উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় খুলনার ডুমুরিয়া থেকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে গাছবাড়িয়া বিলের ৭ একর মৎস্য ঘেরের পাড়ে এক হাজার চারশ' চারা রোপণ করেছেন। তার মোট খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। আর এবার আশা করছেন ৩ লাখ টাকা বিক্রি হবে।

আরেক চাষি বাঐসোনের ডুটকুড়া গ্রামের অসিত কুমার বিশ্বাস ডুটকুড়া বিলে তিন হাজার চারা রোপণ করেছেন। খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা, আশা করছেন ১২ হাজার কেজি তরমুজ ৬ লাখ টাকার বিক্রি হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি নড়াইলের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশেক পারভেজ বলেন, কালিয়ায় অফ সিজন তরমুজ চাষে কৃষকরা সফল। কালিয়ায় স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অফ সিজন তরমুজ চাষে সফল কৃষকরা। প্রত্যন্ত অঞ্চল দুর্গম জায়গা যেখানে সরকারি সেবা সহজে পৌঁছায় না সেখানে সেবা পৌঁছে দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইভা মলিস্নক বলেন, তরমুজ এখন আর মৌসুমি ফল নয়, সারাবছরই তা চাষ করা যায়। বীজ বপনের মোট ৬০-৭০ দিনেই ফসল পাওয়া যায়। ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় এ উপজেলায় প্রথম উচ্চ ফলনশীল ফসল হিসেবে এই অফসিজন তরমুজের চাষে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে