মহাসড়কের উন্নয়নে ঢাকা পড়ছে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রবেশ পথ। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘুরে আসতে হবে প্রায় এক কিলোমিটার। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের স্বজনদের বাইরে যাতায়াত করতেও শরীরের ঘাম ঝরাতে হয়। সড়ক বিভাগের এমন সিদ্ধান্তে বিব্রত অবস্থায় পড়েছে বগুড়াবাসী।
স্থানীয় ব্যক্তিরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ইতোমধ্যে হাসপাতালের জরুরি গেটে আন্ডারপাস রাখার দাবি তুলেছেন। প্রতিনিয়তই চলছে তাদের মানববন্ধব ও বিক্ষোভ। ইতোমধ্যে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল কো-অপারেশন বা সাসেক-২ প্রকল্পের কর্তৃপক্ষকে।
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিত্র এটি। ঢাকা থেকে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নতি করার কাজ চলমান। সেই কাজের অংশ হিসেবে ওই মেডিকেলের জরুরি বিভাগের সামনে একটি আন্ডারপাস রাখা হয়েছিল। হঠাৎ সড়কের সেই নকশা থেকে আন্ডারপাস উধাও হয়ে গেছে। জরুরি বিভাগের সামনে রাখা আন্ডারপাস করা হচ্ছে মেডিকেল কলেজ গেটের সামনে। বিষয়টি জানাজানি হলে বাধ সাধে এলাকাবাসী। তাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে ইতোমধ্যে আন্দোলনে নেমেছে। তারা কলেজ এবং জরুরি বিভাগের দুই গেটেই আন্ডারপাস নির্মাণের দাবি করছেন। একই দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও। তবে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব।
উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক। এই মহাসড়কের সঙ্গেই হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের গেট। এখানে প্রতি মিনিটে গড়ে প্রায় অর্ধশতাধিক অসুস্থ, সুস্থ, শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ পারাপার হয়। এ ছাড়া রোগীদের সুবিধার্থে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মাদ আলী হাসপাতাল থেকে অত্র মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গেট পর্যন্ত তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটির সংযোগস্থল শেষ হয়েছে মেডিকেল কলেজের গেটে। কিন্তু জরুরি বিভাগের গেটে আন্ডারপাস না রাখার কারণে এসব নানাবিধ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে মেডিকেলমুখী মানুষ।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, প্রথম দিকে সাসেক প্রকল্প-২ এর জরিপে ঢাকা-রংপুর এক্সপ্রেসওয়ের নকশাটিতে অত্র মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আন্ডারপাসের নকশা ছিল। তা পরে করা হচ্ছে কলেজ গেটের সামনে। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে জরুরি বিভাগকে বাদ দিয়ে অন্য জায়গায় আন্ডারপাসটি মেনে নিচ্ছে না স্থানীয়রাসহ বিভিন্ন মহল।
শজিমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালটিতে প্রতিদিন রোগী থাকেন দেড় হাজারের ওপর। এ ছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার রোগী চিকিৎসা নেন। তাদের সঙ্গে থাকেন স্বজনরা।
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, 'আমরা লিখিতভাবে, মৌখিকভাবে সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি যে এখানে কলেজ গেট এবং মেডিকেলের জরুরি গেটে আন্ডারপাস রাখতে। এখানে দুই গেটেই মানুষ পারাপারের জন্য নিরাপদ রাস্তা প্রয়োজন। আশা করি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সুরাহা করবেন।'
প্রকল্প ব্যবস্থাপক আহসান হাবিব জানান, তাদের প্রকল্পে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এমভিটি আন্ডারপাস রয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দুর্ঘটনা কমবে। এই কর্মকর্তা আরও বলেন জরুরি বিভাগের সামনে একটি এমভিটি আন্ডারপাস করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে। নকশার কাজ চলছে। আশা করি অতিদ্রম্নত সময়ের মধ্যেই এটির অনুমোদন হয়ে যাবে।