হাজারো পরিবার পানিবন্দি
দ্বিতীয় দফায় লংগদুর নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত!
প্রকাশ | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
ভারত সীমান্ত থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে আবারও পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদু উপজেলার মাইনী নদী, কাঁচালং নদী, চেঙ্গী নদীর অববাহিকা এবং কাপ্তাই হ্রদসহ সব নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পানিতে পস্নাবিত হয়েছে উপজেলার আটারকছড়া, কালাপাকুজ্জ্যা, গুলশাখালী, বগাচতর, ভাসান্যাদম, মাইনীমুখসহ লংগদু সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমিসহ গৃহপালিত পশু। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ জনজীবন।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। সকাল থেকে প্রায় বন্ধ রয়েছে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল। নৌকা দিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে তাদের। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোও পানিতে ডুবে যাওয়ায় চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে জনসাধারণের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাইনী নদী ও কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমায় পৌঁছেছে। গত এক রাতেই প্রায় এক ফুট পানি বৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চল দ্বিতীয় দফায় পস্নাবিত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৯ আগস্ট পাহাড়ি ঢল এবং টানা বৃষ্টিপাতে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পানিবন্দি হয়েছিল পাঁচ শতাধিক পরিবার। পরে পানি কমে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও বন্যার কবলে পড়ে উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। আবারও নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।
বগাচতর ইউনিয়নের বাসিন্দা সোহেল রানা জানান, পানি বাড়লেই বাড়িতে পানি ঢুকে যায়। ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। কিছুদিন পূর্বে বন্যায় অনেক মানুষের আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে থাকতে হয়েছে। এক মাসেই দুইবার পানি ও ঢেউয়ে আমার ঘরের অবস্থা শেষ। কোনো সহযোগিতাও পাই না। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টের মধ্য দিন পার করছি।'
কালাপাকুজ্জ্যা ইউনিয়নের শিবিরবাজার এলাকার ইয়াসিন আরাফাত জানান, পানি কমায় মন ভালো হয়েছিল। কিন্তু গত দুই-তিন দিন ধরে প্রচুর পরিমাণে পানি বাড়ছে। পানি বাড়লে আমরা বড় বেশি সমস্যায় পড়ে যাই। আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয় অনেকের।
আটারকছড়া ইউপি চেয়ারম্যান অজয় চাকমা মিত্র জানান, পাহাড়ি ঢলে আবারও পানি নেমে আসায় আমার ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন কয়েকটা গ্রাম আবারও পস্নাবিত হওয়ার উপক্রম। যাতায়াতের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে খুব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কফিল উদ্দিন মাহমুদ বলেন, 'সীমান্তে বৃষ্টিপাতের কারণে উপজেলার নদ-নদীর পানি বেড়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে লংগদুর নিম্নাঞ্চলে আবারও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তবে এ বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। ১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রয়েছে এবং ত্রাণ সহায়তা চলমান থাকবে।
তবে এলাকাবাসীর দাবি যেন কাপ্তাই বাঁধের জলকপাট পাঁচ ফুটেরও অধিক খুলে দেওয়া হয় তাহলে পানি দ্রম্নত সড়ে যাবে এবং মানুষের ভোগান্তি লাঘব হবে।'