পুনর্বাসন ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ দাবি

পাইকগাছায় তাঁবুতে শতশত পরিবারের মানবেতর জীবন

প্রকাশ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি
খুলনার পাইকগাছায় বন্যায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে রাস্তার পাশে তাঁবু টানিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে অনেক পরিবার -যাযাদি
খুলনার পাইকগাছার দেলুটীর দুর্গত এলাকার বাঁধ মেরামতের পর পানি সরে গেলেও গত দুই সপ্তাহে এখনো ঘরে ফিরতে পারেনি শত শত পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবার ওয়াপদার রাস্তার নিচে তাঁবুতে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অন্যদিকে দুই হাজার হেক্টর কৃষি জমির আমন ফসল উৎপাদনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ত্রাণ নয়, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ পুনর্বাসন সহায়তার দাবি জানিয়েছে দুর্গত এলাকার মানুষ। উলেস্নখ্য, গত ২২ আগস্ট উপজেলার দেলুটী ইউনিয়নের কালিনগর এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ভেঙে ২২নং পোন্ডারের ১৩টি গ্রাম পস্নাবিত হয়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে ১৫ হাজার মানুষ। হাজার হাজার মানুষের স্বেচ্ছাশ্রমে ৫ দিন চেষ্টার পর ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামত হয়। ইতোমধ্যে বাঁধ মেরামতের পর পানি সরে গেলে বিপুল পরিমাণ ক্ষত চিহ্ন রেখে গেছে ভাঙনকবলিত দুর্যোগ। দেলুটী ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল বলেন, বন্যাপরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক পরিমাণ নিরূপণ করা হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১৩শ' ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪৫৫ একর জলাশয়ের মাছ ভেসে গেছে, ২৫টি মন্দির, ১২টি মসজিদ, ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, ৪৯ কিলোমিটার পাঁকা রাস্তা, ২০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ১৮টি কালভার্ট, ১২০ হেক্টর আমন বীজতলা, ২০ হেক্টর তরমুজ ও ১৩ হেক্টর সবজি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভয়াবহ এ বন্যায় হাজারেরও বেশি কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ায় গত দুই সপ্তাহে ঘরে ফিরতে পারেনি অনেক পরিবার। ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় এ সব শত শত পরিবার ভদ্রা ও হাপরখানা নদীর ধার দিয়ে ওয়াপদার রাস্তার নিচে তাঁবুতে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। দুর্গাপুর গ্রামের গৌর মন্ডল জানান, বন্যায় বসবাসের ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা ঘরবাড়ি মেরামত করতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে তাঁবুতে বসবাস করছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসীম কুমার দাশ বলেন, বন্যাপরবর্তী দুর্গত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ২শ' কৃষককে ধানের চারা, ৩শ' কৃষককে সবজি বীজ ও সাড়ে ৪ হেক্টর জমির আমন বীজ সরকারিভাবে বিনামূল্যে সহায়তা করা হয়েছে। ইউএনও মাহেরা নাজনীন বলেন, দুর্গত এলাকার মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে দ্রম্নত ফিরিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। ত্রাণ নয়, পুনর্বাসন সহায়তাসহ টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন দুর্গত এলাকার মানুষ।