নিয়ামতপুরে নির্ধারিত সময়ে ধান চাল সংগ্রহে ব্যর্থ কর্তৃপক্ষ
প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
দেশের উত্তরাঞ্চলকে খাদ্য ভান্ডার নামে পরিচিত। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ধান উৎপাদন হলেও সরকারি গুদামে ধান, চাল সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় গত বোরো মৌসুমের অভ্যন্তরীণ ধান-চাল সংগ্রহে নির্ধারিত সময় পার হলেও পূরণ হয়নি অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা। সিদ্ধ চালের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছালেও ধান সংগ্রহে ব্যর্থ হয়েছে চরমভাবে। ধান সংগ্রহে কেন এমন বিপর্যয় এমন প্রশ্নে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামের চাইতে স্থানীয় বাজারে দর বেশি থাকায় খাদ্যগুদামে ধান দেননি কৃষকরা। এতেই ধান সংগ্রহ অভিযান চরমভাবে বিপর্যয়ে পড়েছে।
উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বোরো ধান সংগ্রহ-২০২৪ মৌসুমে উপজেলায় ৪৫ টাকা কেজি দরে ৩ ৯৭ টন সিদ্ধ চাল এবং ৪৪ টাকা কেজি দরে ৪৮ টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়া ৩২ টাকা কেজি দরে ২ হাজার ৩২৭ টন ধান ক্রয়ের বরাদ্দ হয়। চলতি বছরের মে মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান, চাল সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়। গুদামে সিদ্ধ চাল সরবরাহে উপজেলার ১৩ জন মিলার চুক্তিতে আসেন। এসব ধান, চাল সরবরাহে সরকারিভাবে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ৩৯৭ টন চালের মধ্যে মিলাররা সরবরাহ করেছেন ৩৮৬ টন। এতে এখনো ১১ টন চাল সংগ্রহে ঘাটতি রয়েছে।
সিদ্ধ চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি হলেও বিপরীত চিত্র ধান সংগ্রহে। সরাসরি কৃষকদের কাছে ২ হাজার ৩২৭ টন ধানের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১৩১ টন। ফলে ধান সংগ্রহ অভিযান চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ধান, চাল সংগ্রহ উপজেলা সদরের খাদ্য গুদামে হলেও দ্বিতীয় খাদ্যগুদাম শিবপুরে এক ছটাকও সংগ্রহ হয়নি।
কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং করার পরও কৃষকদের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি।
উপজেলা সদরের কৃষক নুরুল ইসলাম, রতন দাস, সনজিত দাস জানান, সরকারি খাদ্যগুদামে সহজ শর্তে ধান না নেওয়ায় এমন শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে গেলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, অনলাইনে আবেদন, ধানের মান নির্ণয়সহ বিভিন্ন ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়।
তাছাড়া সরকার ধান ক্রয়ে যে দর নির্ধারণ করেছে তা স্থানীয় বাজারের থেকে কম। এর চাইতে স্থানীয় বাজারে মণপ্রতি ধান ২৫০ থেকে ৩০০টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। কোনো ঝামেলা ছাড়াই ধান বিক্রির টাকা হাতে পাচ্ছেন। তাই খাদ্যগুদামে কিছু ধান দিলেও ঝামেলার কারণে আর দেওয়া হয়নি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা পারভেজ আনোয়ার বলেন, গত দুই সপ্তাহ আগে ধান সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে কিনা জনতে চেয়ে ঊর্ধ্বতন মহল থেকে পত্র দেওয়া হয়েছিল। সেখানে ধান সংগ্রহ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সময় বৃদ্ধি করা হবে কিনা সে নির্দেশনা এখনো পাননি।