শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গাংনীতে পোকা দমনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আলোক ফাঁদ

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
  ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
গাংনীতে পোকা দমনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আলোক ফাঁদ

রোপা আমন ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে কীটনাশক ব্যবহারের পরিবর্তে মেহেরপুরের গাংনীতে কৃষকদের কাছে আলোক ফাঁদের ব্যবহার দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কৃষি অফিসের উদ্যোগে এ আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হচ্ছে। এটি ব্যবহারে ক্ষতিকর শত্রম্ন পোকা ও উপকারী বন্ধু পোকাও নির্ণয় করা যাচ্ছে। এই পদ্ধতিটি বর্তমানে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে ২৮টি বস্নকে আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হয়েছে।

জানা গেছে, আলোক ফাঁদ ধানের পোকা দমনে একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। আলোক ফাঁদ তৈরিতে হারিকেন, বৈদু্যতিক বাল্ব ও সৌরবিদু্যতের সোলার প্যানেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ধান ক্ষেত থেকে ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় বাঁশের খুঁটির সাহায্যে মাটি থেকে ২-৩ ফুট ওপরে একটি বৈদু্যতিক বাল্ব জ্বালিয়ে এর নিচে একটি পাত্রে ডিটারজেন্ট পাউডার অথবা কেরোসিন মিশ্রিত পানি রাখা হয়। সন্ধ্যার পর এই আলোক ফাঁদের আলোয় আকৃষ্ট হয়ে ধান ক্ষেতের বিভিন্ন পোকামাকড় এসে পাত্রের পানিতে পড়ে। এভাবে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে ধানসহ ফসলের ক্ষতিকর ও উপকারী পোকার উপস্থিতি নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অতি অল্প খরচে তৈরি এ আলোক ফাঁদ অন্ধকার রাতে দেখতেও বেশ দৃষ্টিনন্দন।

গাংনীর বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আলোক ফাঁদের মাধ্যমে ক্ষতিকর পোকা নিধনে কোনো খরচ নেই। এই পদ্ধতিতে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে না বলে এতে পরিবেশেরও কোনো ক্ষতি হয় না। এটি ব্যবহার করে এলাকার অনেক কৃষক বর্তমানে ক্ষেতে খুব কম ওষুধ ব্যবহার করছেন। এতে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন উপজেলার কৃষকরা।

গাংনী কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমন ক্ষেতে কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে উপজেলার ২৮টি বস্নকের প্রতিটিতে একটি করে আলোক ফাঁদ প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে। একই সঙ্গে এর উপকারিতা সম্পর্কে কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে। কৃষি দপ্তরের এ প্রদর্শনী দেখার পর উৎসাহিত হয়ে আরও শতাধিক কৃষক নিজ উদ্যোগে আলোক ফাঁদের মাধ্যমে ক্ষতিকর পোকা নিধন করছেন। কৃষকদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। প্রতি সোমবার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার নিজ নিজ বস্নকে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেন।

কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইমরান হোসেন জানান, এবার উপজেলায় ১৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। পোকা-মাকড়ের ক্ষতির হাত থেকে ফসল রক্ষায় ও পোকা দমনে কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে পরিবেশবান্ধব আলোক ফাঁদ স্থাপনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে