চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলক বেতন আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে পড়াশোনার নিয়ম থাকলেও উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের পহরচাঁদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত কয়েক বছর ধরে প্রতিমাসে শিক্ষার্থী প্রতি ২০ টাকা করে বেতন আদায় করা হয়। বাধ্যতামূলক বেতন আদায়ে ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থী। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিভাবক ও সচেতন মহল লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর পহরচাঁদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিনকে অপসারণ করার দাবি জানান। গত সোমবার এ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়টি অত্যন্ত দুর্গম ও গরিব জনসাধারণ অধু্যষিত এলাকায় অবস্থিত। কিন্তু বিগত ৪-৫ বছর ধরে অতিরিক্ত শিক্ষক রাখার নামে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মাসিক ২০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। অধিকাংশ অভিভাবক গরিব হওয়ায় এ টাকা যথাসময়ে দিতে পারেন না। ফলে শিক্ষার্থীদের টাকার জন্য বকাঝকা করা হয়। এ কারণে ভীত হয়ে অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যেতে চায় না।
প্রধান শিক্ষককে বেতন না নেওয়ার জন্য বললে তিনি এটি কমিটির সিদ্ধান্ত এবং সবাইকে মানতে হবে বলে জানান। অন্যদিকে বার্ষিক স্স্নিপ ফান্ডসহ অন্যান্য বরাদ্দের ব্যাপারে কমিটির সদস্য বা কাউকে অবহিত করা হয় না। তাছাড়া সরকারি বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও বিগত চার বছর ধরে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হলেও ছাত্রছাত্রীদের কোনো পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে না। ফলে কোমলমতি ছেলেমেয়েরা হতাশ এবং তারা এক প্রকার প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এমনকি জাতীয় দিবস পালনের জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে অর্থবরাদ্দ থাকলেও বিদ্যালয়ে কোনো অর্থ ব্যয় করা হয় না, ছাত্রদের কোনো পুরস্কারও দেওয়া হয় না।
অভিযোগপত্রে উপরোক্ত বিষয়গুলো যথাযথ তদন্তপূর্বক বিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিনকে অপসারণ করার দাবি করা হয়।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে পহরচাঁদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন জানান, এক সপ্তাহ আগে স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো সমাধান করা হয়েছে। লোহাগাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু জাফর জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন কিংবা পরীক্ষার ফি নেওয়ার কোন নিয়ম নেই। বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত শিক্ষক রাখলে তার বেতন কমিটির সদস্যরা দেবেন।
ইউএনও মুহাম্মদ ইনামুল হাছান জানান, 'অভিযোগ পেয়েছি। আনীত অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'