ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে সন্ত্রাসীরা বাঁওড়ের মাছ লুট অব্যাহত রেখেও খ্যান্ত হয়নি। এবার জেলে সম্প্রদায়ের নৌকা ও জাল পুড়িয়ে দিয়ে পথে বসিয়েছে তারা। গত সোমবার গভীররাতে সন্ত্রাসীরা জেলেদের নৌকা ও মাছ ধরা জাল পুড়িয়ে দেয়। ৫ আগস গণ-অভু্যত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত কুশনা বাঁওড়টির জেলে সম্প্রদায়ের ওপর একের পর এক জুলুম চলছে। অথচ দেখার কেউ নেই।
উপজেলার ফুলবাড়ী মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি প্রশান্ত কুমার জানান, 'সমিতির মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী কুশনা বাঁওড়টি বাংলা সন ১৪২৬ সালে সরকারের কাছ থেকে ৬ বছরের জন্য ইজারা নেন তারা। যার মেয়দ কাল ১৪৩১ সনের ৩০ চৈত্র পর্যন্ত। কিন্তু বাঁওড়ে প্রচুর মাছ থাকা অবস্থায় ৬ আগস্ট সকাল থেকে আমাদের বাঁওড় থেকে প্রকাশ্যে মাছ লুট শুরু হয় যা আজ পর্যন্ত চলছে।' তিনি বলেন, 'উপজেলা প্রশাসন, থানা এমনকি রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও আমাদের কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। এ পর্যন্ত ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকার মাছ বাঁওড় থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সোমবার গভীর রাতে আমাদের শেষ সম্বল নৌকা ও জাল পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। ওই সন্ত্রাসীরা আমাদের মৎস্য সমিতির সদস্যদের পথে বসিয়ে দিয়েছে। আমাদের এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরা ছাড়া কোনো পথ খোলা দেখছি না।'
ফুলবাড়ী মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি প্রশান্ত কুমার আরও বলেন, 'এর আগে মাছ লুটের বিষয় নিয়ে থানা ও আর্মির কাছে লিখিত অভিযোগ করলে কোনো কাজ হয়নি। কাজ হয়নি রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারস্থ হয়েও। গত মঙ্গলবার ফের নৌকা ও জাল পোড়ানোর জন্য ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এলাম থানায়। জানি না কী হবে!' অভিযোগে কোনো প্রভাবশালী নেতাদের নাম আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে প্রশান্ত কুমার বলেন, 'এখানে টিকে থাকার তাগিদে অনেকের নাম নিতে পারছি না। আগে এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওই এলাকার প্রভাবশালী বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কয়েক নেতার নাম সমগ্র উপজেলায় চাউর হলেও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি শুধু উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মহাসিনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে।'
বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা বিএনপি'র সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে। আমরা বিষয়টি দলীয়ভাবে দেখছি। প্রমাণ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আমার সুপারিশ থাকবে।'
থানার ওসি আল মামুন বলেন, কুশনা বাঁওড়ের নৌকা ও জাল পোড়ানো লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।