ডুমুরিয়ায় পাউবো'র ৭৫টি সস্নুইস গেট অকার্যকর তিন গেটের পলি অপসারণের উদ্যোগ
প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সুব্রত কুমার ফৌজদার, ডুমুরিয়া (খুলনা)
নদী-খালের নাব্য হ্রাস, দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে গেটের মুখে পলি আটকে খুলনার ডুমুরিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৭৫টি সস্নুইস গেট অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ফলে এসব গেট দিয়ে পানি নিষ্কাশন না করতে পারায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। যে কারণে গেল ভারী বর্ষণে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষিতে। তবে বিশেষ কিছু অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের লক্ষ্যে ৩টি সস্নুইস গেটের মুখে পলি অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছে পাউবো কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, পলি জমে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া অঞ্চলের অধিকাংশ নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। যার কারণে কমে গেছে পানির প্রবাহ। ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা সীমান্তবর্তী খরস্রোতা শোলমারী নদী গত ৪-৫ বছরের মধ্যে ভয়াবহ পলি পড়ে প্রায় সমতল ভূমিতে রূপ নিয়েছে। যশোর সীমান্তবর্তী বিলখুকশির বিলে টিআরএম প্রকল্প বন্ধ হওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে হরি নদী পলিপড়ে তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। একই অবস্থায় রূপ নিয়েছে সালতা ও ভদ্রা নদী। যে নদী দুটি গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দে পুনঃখনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। খননের ২ বছর যেতে না যেতেই পলি পড়ে নদীর বেশিরভাগ অংশটুকু সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। সালতা নদীটি ডুমুরিয়া সদর থেকে টিয়াবুনিয়া পর্যন্ত পলি পড়ে ছোট খালে রূপ নিয়েছে। এসব নদী-খালে পাউবো'র ১৭/১, ১৭/২, ২৫, ২৬, ২৭/১, ২৭/২ ও ২৮/১ নং পোল্ডারের ওয়াপদা বাঁধে ৭৫টি সস্নুইস গেট রয়েছে। যার সবকয়টি অকার্যকর হয়ে পড়েছে পলি জমার কারণে। পানি নিষ্কাশন না হতে পারায় গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ডুমুরিয়া অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা পস্নাবিত হয়েছে।
গত এক সপ্তাহ যাবৎ চলছে শোলমারী, চহেড়া ও ষষ্ঠীতলা সস্নুইস গেটের পলি অপসারণের কাজ। এসব গেটের মুখে ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত পলি পড়েছে। চহেড়া ২ ভেন্ট সস্নুইস গেটে একটা এস্কেভেটর দিয়ে কাজ করতে দেখা গেছে, ষষ্ঠীতলা ১ ভেন্ট সস্নুইস গেটে একটা ছোট ড্রেজিং মেশিন দ্বারা কাজ চলছে। আর শোলমারী ১০ ভেন্ট সস্নুইস গেটে ৩টি ড্রেজিং মেশিন দিয়ে পলি অপসারণের কাজ চলছে।
খর্ণিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ দিদারুল হোসেন দিদার জানান, 'পলি পড়ে চহেড়ার ২ ভেন্টে সস্নুইস গেট বন্ধ হয়ে পড়েছে। যার কারণে সিংগার বিলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি খারাপ দেখে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে কাজ শুরু করেছি।'
জেলা বিএনপি নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোল্যা মোশাররফ হোসেন মফিজ জানান, 'কিছুদিন আগে এলাকাবাসীকে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে শোলমারী গেটের মুখে পলি অপসারণের কাজ করেছি। গেটের মুখে প্রচুর পলি পড়েছে। যার কারণে উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে পলি অপসারণের কাজ চলছে।'
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী আ. রহমান তাযকিয়া জানান, দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলো নাব্যতা সংকটে ভুগছে। জোয়ারে পানি সঙ্গে সমুদ্রে থেকে অস্বাভাবিক পলি আসার কারণে এ নাব্য হ্রাস পাচ্ছে। জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে শোলমারী, চহেড়া ও ষষ্ঠীতলা সস্নুইস গেটে পলি অপসারণের কাজ করছি। এ কাজ সম্পন্ন করতে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হবে।