আট বছর পৃথিবীর আলো দেখিনি :আমান আযমী
প্রকাশ | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (বরখাস্ত) আবদুলস্নাহিল আমান আযমী বলেছেন, 'আমি গেল ৮ বছর বন্দি থাকা অবস্থায় পৃথিবীর কোনো আলো দেখিনি। প্রতি রাতেই ক্রসফায়ারের ভয় থাকত। তারা খুব দুর্ব্যবহার করত আমার সঙ্গে।'
আট বছর গুম থাকার পর মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত হন আবদুলস্নাহিল আমান আযমী। তিনি গুম থাকার সময়ের বর্ণনা দেন।
আবদুলস্নাহিল আমান আযমী জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির প্রয়াত গোলাম আযমের ছেলে। ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট রাতে আবদুলস্নাহিল আমান আযমীকে গুম করা হয় বলে পরিবার জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে আবদুলস্নাহিল আমান আযমী বলেছেন, 'বারবার মনে হতো, তারা হয়তো আমাকে ক্রসফায়ার করে হত্যা করবে। আমি তাহাজ্জদ পড়ে আলস্নাহর কাছে শুধু কান্না করতাম। আমার লাশটা যেন আমার পরিবারের কাছে যায়।'
আবদুলস্নাহিল আমান আযমী আরও বলেন, 'যখন আমার বাসায় তারা এলো, তখন তাদের কাছে আমি জানতে চেয়েছিলাম, আপনারা কারা, পরিচয় কী, পরিচয়পত্র দেখান। আমাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো ওয়ারেন্ট আছে কি না, তা জানতে চেয়েছিলাম। তারা আমার কথার জবাব দেয়নি।' তিনি বলেন, 'একপর্যায়ে আমাকে নিয়ে গাড়িতে ওঠায়। আমার চোখ-মুখ বাঁধা অবস্থায় একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ফেলে রাখা হয়, অন্ধকার এক ঘর। টয়লেটে যেতে চাইলে চোখ-হাত বেঁধে নিয়ে যেত।'
২০১৬ সালের ২২ আগস্ট রাতে আবদুলস্নাহিল আমান আযমীকে তুলে নেওয়া হয়। সে সময় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজধানীর বড় মগবাজারের বাসা থেকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তাকে আটক করা হয়।
পরে আবদুলস্নাহিল আমান আযমীকে সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অব্যাহতি দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। তবে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আটকের বিষয়টি একাধিকবার দাবি করা হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়।
৫ আগস্ট রাতে সেনাবাহিনীর সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনরা ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার কচুক্ষেতে সমবেত হয়ে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) 'আয়নাঘরে বন্দিদের' মুক্তির দাবি জানান। এরপরই তারা মুক্ত হয়ে ফিরে আসেন।