সালথায় ডিঙ্গি নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর
প্রকাশ | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
আবু নাসের হুসাইন, সালথা (ফরিদপুর)
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষি মাঠ, বিল ও বাঁওড়। বছরের শ্রাবণ-ভাদ্র থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত পানি থাকে এই অঞ্চলের কিছু গ্রামে। তখন মাঠে চলাচল, জেলেদের মাছ ধরা ও কৃষকের কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ার জন্য একমাত্র বাহন হয়ে উঠে নৌকা। তাই এ সময় বেড়ে যায় নৌকার কদর। নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন স্থানীয় কারিগররা। নতুন নৌকার পাশাপাশি অনেকে পুরাতন নৌকা মেরামতের জন্যও ছুটে আসেন তাদের কাছে।
সরেজমিন উপজেলার নকুলহাটি, জয়কাইল ও মোন্তারমোড় বাজার ঘুরে দেখা যায়, কারিগররা ডিঙ্গি (কোসা) নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাশাপাশি পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজও করছেন তারা। নৌকা তৈরির কারিগররা জানান, আগের তুলনায় বর্তমানে নৌকা তৈরিতে ব্যবহৃত সরঞ্জামের দাম বেড়েছে বহুগুণ। তাই আগের চেয়ে উৎপাদন খরচও বেড়েছে অনেক।
নকুলহাটি বাজারের কাঠমিস্ত্রি মজনু ও সুশান্ত বলেন, 'সারাবছর কাঠের কাজ করি। বর্ষার সময় এলে নৌকার তৈরি করি। কড়ই ও উড়িআম কাঠ দিয়ে বেশিরভাগ নৌকা তৈরি করা হয়। এ ছাড়া আলকাতরা, তারকাটা ও গজলসহ বেশ কিছু উপকরণ প্রয়োজন হয়। এ বছর শতাধিক নতুন কোসা নৌকা তৈরি করা হয়েছে। এতে বাড়তি একটি আয় হচ্ছে আমাদের।'
তারা আরও জানান, আকার ভেদে ছোট ডিঙি নৌকা তারা বিক্রি করছেন ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকায়। মাঝারি নৌকা বিক্রি করছেন ৯ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা দরে। বড় কোসা নৌকা এ বছর বানানো হয়নি। বড় কোসা নৌকা কাঠ অনুযায়ী ১৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়। নৌকা তৈরির কাঠ, লোহাসহ অন্যান্য সরঞ্জামের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের চেয়ে এবার খরচ কিছুটা বেশি পড়ছে।
উপজেলার ফুকরা গ্রামের কাঠমিস্ত্রি গুরুদাস বলেন, অন্যান্য কাজের পাশে ছোট-বড় পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজ করি আমি। এই মেরামত কাজ করে দিনমজুরি হিসাবে টাকা নেই। পুরাতন নৌকা মেরামত করতে খরচ কম হয় না। এরপর আবার আলকাতরা লাগিয়ে দিতে হয় নতুন ও পুরাতন নৌকাগুলোতে। এই আয় দিয়ে কোনো রকম সংসার খরচ চালাতে হয়।