বগুড়ার নন্দীগ্রামে কীটনাশক বিক্রেতার দেওয়া ভুল আগাছানাশক ক্ষেতে প্রয়োগ করায় আখগাছ মারা যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে সেই ক্ষেত বর্গা নেওয়া গরিব আখচাষির লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
সরেজমিনে ও বিস্তারিত তথ্যে জানা যায়, উপজেলার ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের বীরপলি কদমকুড়ি গ্রামের রইচ উদ্দিনের ছেলে মোফাজ্জল হোসেন নিজ জমি না থাকায় ৫০ হাজার টাকা দিয়ে পৌনে দুই বিঘা জমি পত্তনি (বর্গা) নেন। ওই জমিতে গত দুই মাস আগে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে আখের চারা রোপণ করেন। চারা রোপণ করার কিছুদিন পর আখের জমিতে আগাছা জন্মে। মোফাজ্জল হোসেন তা নিধন করার জন্য পার্শ্ববর্তী মুরাদপুর কিরনমালা বাজারের নুরুল ইসলামের মেসার্স নুরুল ট্রেডার্স নামক কীটনাশকের দোকানে গিয়ে জানান, বিক্রেতা নুরুল ইসলাম তাকের্ যাপিড নামক ৫শ' মিলির বোতলের একটি আগাছানাশক প্রয়োগ করতে বলেন এবং এতে ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না বলে জানান। আগাছানাশক নিয়ে মোফাজ্জল হোসেন তার আখের জমিতে গত তিন দিন আগে প্রয়োগ করেন। আগাছানাশক প্রয়োগের পরদিন থেকে মোফাজ্জল হোসেনের আখগাছগুলো লাল হয়ে শুকিয়ে মারা যেতে থাকে। আখ ক্ষেতের এমন অবস্থা দেখে মোফাজ্জল হোসেন দিশেহারা হয়ে কীটনাশক বিক্রেতা নুরুল ইসলামকে জানিয়ে জমি পরিদর্শন করার কথা বলেন। এতে ওই বিক্রেতা কর্ণপাত করেননি।
ক্ষতিগ্রস্ত আখচাষি মোফাজ্জল হোসেন জানান, 'আমি গরিব মানুষ, ধার দেনা ও ঋণ করে জমি পত্তনি নিয়ে আখ চাষ করেছিলাম। কিন্তু কীটনাশক বিক্রেতার দেওয়া ভুল আগাছানাশকে আমার সব শেষ। আমি ৮ মাস পর থেকে আখ তুলতে পারতাম। আখ বিক্রি করে আমার ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার আখ বিক্রি হতো। আমি আখ বিক্রির টাকায় ধারদেনা মিটিয়ে ভালোভাবে সংসার চালাতে পারতাম। কিন্তু এখন পথের ফকির হয়ে গেলাম।'
কীটনাশক বিক্রেতা নুরুল ইসলাম জানান, আমি তাকে আগাছা নাশক আখ গাছের নিচের দিক দিয়ে প্রয়োগ করতে বলেছি। এতে আখ গাছের কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু তিনি যদি আখ গাছের উপর দিক দিয়ে প্রয়োগ করেন তাতে আমার কি করার আছে।'
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজিউল হক জানান, 'ঘটনাটি শুনেছি। ক্ষতিগ্রস্ত আখচাষি যদি অভিযোগ করেন, তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'