মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত
তত্ত্বাবধায়কসহ সিনিয়র নার্সরা কর্মস্থলে অনুপস্থিত
প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে কর্মস্থলে আসছেন না মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দীনসহ তিন সিনিয়র নার্স।
কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে জেলার সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবা ও দাপ্তরিক কাজ।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার, সদর হাসপাতালে নানা অনিয়ম এবং রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় জনরোষের আশঙ্কায় তারা কর্মস্থলে আসছেন না।
সরেজমিন মানিকগঞ্জ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গত পাঁচ আগস্টের পর থেকে এখনো অনুপস্থিত রয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হাসপাতালটির মেডিকেল অফিসার ডা. বদরুল আলম চৌধুরী। একই সময় থেকে পলাতক রয়েছে হাসপাতালের ওটি ইনচার্জ জান্নাত আরা শিমুল, সিনিয়র নার্স সাইফুল ইসলাম এবং সহকারী নার্স মোতালেব হোসেন। হাসপাতালের কর্মরত নার্স ও স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, ডা. বাহাউদ্দীনের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলা হওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দলীয় নেতাকর্মীর নাম ভাঙিয়ে সিনিয়র নার্স জান্নাত আরা শিমুল, সাইফুল ইসলাম ও মোতালেব হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালের তিন সিনিয়র নার্সের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। বন্ধ রয়েছে তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক অ্যাকাউন্ট।
তবে এখনো অনুপস্থিত থাকা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বাহাউদ্দীন অনিয়ম দুর্নীতির কথা অস্বীকার করে বলেন, 'কারও ভয়ে নয় শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে আমার অর্জিত ছুটির দরখাস্ত করা আছে। আমার পায়ের ব্যথা এবং প্রেসারের কারণে শারীরিক অসুস্থতার ছুটি নিয়েছিলাম। সামনের সপ্তাহের বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমার ছুটি বলবত আছে।'
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. বদরুল আলম চৌধুরী বলেন, 'হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অনুপস্থিত থাকলে আর্থিক সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকে। অনেক কার্যক্রম আছে যেগুলোয় অর্থের প্রয়োজন হয় সেগুলো পরিচালনা করা যায় না। বিভিন্ন সেক্টরের সরবরাহ চাওয়ার জন্য বড় বড় সমস্যা সমাধান করা যায় না। হাসপাতালের দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। অবৈধভাবে বিনাছুটিতে থাকলে মন্ত্রণালয় থেকে তাকে শোকোজ করা হবে। কেন সে অনিুপস্থিত এই উত্তর তাকেই দিতে হবে।' জেলা সিভিল সার্জন ডা. মকছেদুল মোমিন বলেন, 'হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অনুপস্থিতির কথা জেনে আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলেছি। আমাকে তিনি জানিয়েছেন উনি ছুটিতে আছেন।'