মেহেরপুরের গ্রীষ্মকালীন কপি চাষে লোকসানের মুখে চাষি
প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
গোলাম মোস্তফা, মেহেরপুর
মেহেরপুরের মাটি নানা ধরনের সবজি চাষের উপযোগী হওয়ায় বছরজুড়ে চাষ হয় ফুল ও বাঁধা কপির। এ বছরও মাঠজুড়ে চাষ হয়েছে কপির। তবে এবার তীব্র গরম ও অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে কপি হলুদ হয়ে পচে যাচ্ছে। নানা রকম ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও কোন কাজ হচ্ছে না। অন্য বছর মাত্র ৩ মাসে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে লক্ষাধিক টাকায় কপি বিক্রি করতে পারলেও এবছর লোকসান গুণতে হচ্ছে বিঘা প্রতি ২০-৩০ হাজার টাকা।
কৃষি বিভাগের হিসাবে জেলায় প্রায় এক হাজার ৭৬৪ হেক্টর জমিতে ফুল ও বাঁধা কপির চাষ হয়েছে। ভৌগোলিকভাবে মেহেরপুরের মাটি উঁচু ভূমি হওয়ায় এ জেলায় সময়ে অসময়ে সব ধরনের সবজি চাষ হয়ে থাকে। আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় না। অন্য জেলার চাইতে এ জেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম হওয়ায় গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষ করা সম্ভব হয়। তবে এবছর দেখা গেছে তার বিপরীত চিত্র। তীব্র গরম আর থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে মাঠের কপি হলুদ হয়ে পচে যাচ্ছে। নানা রমক ছাত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও মিলছে না প্রতিকার। ধরছে না কাঙ্ক্ষিত ফুল এবং গুটি।
তিন মাস, অর্থাৎ ৯০ দিনের মধ্যে কপি বাজারজাত করেন চাষিরা। প্রতি বিঘা জমিতে বাঁধাকপি ৫ টন ও ফুলকপি ৩ টন উৎপাদিত হয়। এতে প্রতি বছর কৃষকরা মোটা অঙ্কের টাকা ঘরে তোলেন। প্রতিবিঘা জমিতে সার-বীজ, কীটনাশকসহ চাষ খরচ হয়েছে ৩৫-৪০ হাজার টাকা। গেল বছর বিঘা প্রতি কপি বিক্রি করে খরচ বাদে চাষি ঘরে তুলেছিলেন ৫০-৬০ হাজার টাকা। কিন্তু এবছর কপির উৎপাদন খরচই উঠছে না।
সদর উপজেলার পৌরসভার দিঘীরপাড়ার কপি চাষি মোশাররফ জানান, তীব্র গরম আর থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে কপির কাঙ্ক্ষিত ফুল ও গুটি আসছে না। হলুদ হয়ে পচে যাচ্ছে। এখান উৎপাদন খরচই উঠছে না। প্রতি বিঘায় লোকসান হচ্ছে ২০-৩০ হাজার টাকা।
সদর উপজেলার দিঘীরপাড়া বস্নকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা চায়না পারভিন যায়যায়দিনকে জানান, জেলায় সারা বছর কপির চাষ হয়ে থাকে। এটা শীতকালীন সবজি হলেও কৃষকরা তাদের ভাগ্য বদলের জন্য ঝুঁকি নিয়ে কপির চাষ করে থাকেন। তবে এবছর প্রচন্ড গরম ও অধিক বৃষ্টিপাতের কারনে কপির সমস্য হচ্ছে। তারপরেও চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার যায়যায়দিনকে জানান, 'আমরা চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করাসহ নানা সহযোগিতা করছি। জেলায় অনেক কৃষক ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ নানা সবজি আবাদ করেছেন। কিন্তু এবছর প্রাকৃতিক কারণে কপির কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে কপির দাম ভালো আছে, চাষিরা পুষিয়ে নিতে পারবে।'