উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইয়াবা গডফাদার অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার
তিন জেলায় আরও আটক ৮
প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা গডফাদার একজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনার কেন্দুয়া, পাবনার সাঁথিয়া ও ঈশ্বরদীতে খুনের প্রধান আসামিসহ ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর-
উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান পরিচালনা করে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠনের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ইয়াবার গডফাদার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর খাতায় মোস্ট ওয়ান্টেড নবী হোসেন বাহিনীর প্রধান নবী হোসেন ও তার ভাইকে সৈয়দ হোসেন বুলুকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছেন ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যরা। শনিবার সকালে ক্যাম্প ৮ ওয়েস্ট এলাকায় ইরানি পাহাড় পুলিশ ক্যাম্প এ অভিযান পরিচালনা করে। ১৪ এপিবিএন পুলিশের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইকবাল অভিযানের বিষয়টি শনিবার রাত ১০টার দিকে সত্যতা নিশ্চিত করেন। আটককৃতরা বস্নক-বি/৪১, ক্যাম্প-৮ (ইস্ট) বসবাসরত মৃত মোস্তাক আহমদের পুত্র। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২টি বিদেশি পিস্তল ও ৮ রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়। এপিবিএন পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত নবী হোসেন মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন নবী হোসেন গ্রম্নপের প্রধান। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, উখিয়া থানায় নবী হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যা ও মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ১৭৫ বোতল বিদেশি মদ এবং ৩০ কেজি গাঁজাসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার সকাল ৮টা এবং ভোর রাতে পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় মাদক বহনকারী একটি পাজেরো জিপ ও প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার চাষাঢ়া এলাকার মো. বিলস্নাল হোসেন (৫০), মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার মালির পাথর (পঞ্চসার) গ্রামের মো. আলমগীর হোসেন (৪৪), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের মো. রফিক (৩১) ও একই এলাকার মো. তানভীর (২০)। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল কবির।
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় ডাকাত দলের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। শনিবার উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের মজলিশপুর থেকে আটক করা হয় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার চর টেংগাপুর গ্রামের মো. খোরশেদ আলম বাদশা নামক ডাকাত সদস্যকে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, এ বিষয়ে ৫-৬ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরদিকে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় প্রতারক চক্রের এক নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের ছিলিমপুর গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। সান্দিকোনা ইউনিয়নের মনোয়ারা, চিরাং ইউনিয়নের ছিলিমপুর গ্রামের সুজনা, বাট্টা গ্রামের আঁখি ও সাজিউড়া গ্রামের কবিতা আক্তারসহ বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আটককৃত প্রতারক নারী উপজেলার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের নাম ভাঙিয়ে ও টিসিবি'র পণ্য দেওয়ার নাম করে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়। তার নাম জোছনা আক্তার (৪৯) গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার মদন থানা সদরে। তার স্বামী নেই। এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান আকন্দ মুঠোফোনে জানান, আটককৃত নারীকে প্রতারণার দায়ে ছিলিমপুর গ্রামে সাধারণ জনতা ঘেরাও করলে পুলিশ থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার নামে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার হলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাঁথিয়া উপজেলা শাখার ভুয়া স্বঘোষিত সভাপতি ও ছাত্রদলের নেতা ইমরান হোসেন শিশির (২৯)। এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানায় দ্রম্নত বিচার আইনে ৪ জনের নামে মামলা হয়েছে। শিশির উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি কোনাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে। এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, চাঁদার টাকা ফেরত দিয়েছে এবং অন্যান্য আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। শিশিরকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, আমার নামে চাঁদাবাজি করে সে অবশ্যই জঘন্যতম কাজ করেছে। আমার নামে যদি কেউ চাঁদা দাবি করে তাহলে কেউ চাঁদা দেবেন না এবং আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, ঈশ্বরদীতে মুক্তিপণের দশ লাখ টাকা না পেয়ে বৃদ্ধকে খুনের ঘটনার প্রধান আসামি মো. শাজাহানকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মনিরুল ইসলাম। গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. শাজাহান উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের বড়ইচারা গ্রামের মো. আজিবর রহমানের ছেলে। ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আল আমিন বাদি হয়ে একটি অপহরণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আসামিকে পাবনা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।