কিশোরগঞ্জ সদর থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৮৮ জনের নামে হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় সাবেক পরারাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সাবেক যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ, কিশোরগঞ্জের অপর তিন এমপি রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, আফজাল হোসেন, সোহরাব উদ্দিন এবং সাবেক এমপি ও সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদকেও আসামি করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২০০ থেকে ৩০০ জনকে। গত শুক্রবার মামলাটি করেছেন শহরের বত্রিশ এলাকার মৃত আশরাফ আলীর ছেলে রথখোলা এলাকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী ও স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মতিউর রহমান। সদর থানার ওসি গোলাম মোস্তফা মামলার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মশিউর রহমান হুমায়ুন, সাবেক পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওলাদ হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দ্বিতীয় ছেলে রাসেল আহমেদ তুহিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বকুল, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমদ সাদী, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোলস্না সুমন, সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উমান খান, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিস বেগম, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান প্রমুখ। মামলার এজাহারে উলেস্নখ করা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিল আওয়ামী লীগ কার্যালয় এলাকায় আসার পর মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। এ সময় বাদী মতিউর রহমানসহ অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। অনেকেই খরমপট্টি এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাসায় আশ্রয় নিলে আসামিদের পক্ষ থেকে পেট্রোল ঢেলে বাসায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে সদর উপজেলা যশোদল বীর দামপাড়া এলাকার অঞ্জনা বেগম (২৮) এবং যশোদল ভাবুন্দিয়া এলাকার জুলকার হোসাইন (৩৮) নামে দুই ব্যক্তি অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান।
পাবনা প্রতিনিধি জানান, পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলা, গুলি ও মারপিটে আহত হওয়ার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। এ নিয়ে আন্দোলন ঘিরে পাবনা সদর থানায় দুইটি মামলা হলো।
পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান জানান, পাবনা শহরের রাধানগর যুগীপাড়া মহলস্নার সুজন হোসেন নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে মামলাটি করেন। মামলায় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাড়ারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খাঁনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শিবলী সাদিকসহ ১২৪ জনের নাম উলেস্নখসহ অজ্ঞাতনামা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। মামলার বাদী সুজন হোসেন অভিযোগে উলেস্নখ করেন, গত ৪ আগস্ট তিনিসহ অনেকে ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহন করেন। বেলা পৌনে একটার দিকে তারা শহরের লতিফ টাওয়ারের সামনে অবস্থান নেন। সে সময় পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশে গুলিবর্ষণ ও হামলা চালায়। এতে মামলার বাদী সুজন পেটে এবং অনিক নামের একজন মাথায় ও চোখে গুলিবিদ্ধ হন। তারা ছাড়াও সেদিন হামলায় একশ' ছাত্র-জনতা আহত হয়।