শাহজাদপুরে দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় লাখো মানুষের দুর্ভোগ

বিস্তীর্ণ এলাকার কাঁচা পাকা সড়কে হাঁটুসমান পানি

প্রকাশ | ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

এম. এ জাফর লিটন, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ)
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে যমুনা তীরের বাঙালা গ্রাম - যাযাদি
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় লাখো মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল আর বন্যার পানিতে শাহজাদপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা পস্নাবিত হয়েছে। শাহজাদপুরের প্রধান নদী যমুনা, করতোয়া, বড়াল আর হুরাসাগর নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়ে উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। কিন্তু চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে জনদুর্ভোগ যেন বেড়ে যায়। অদ্যাবধি এ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত কিংবা পানি বৃদ্ধি না হওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকার কাচা পাকা সড়ক হাঁটু পানির নিচে রয়েছে। ফলে যানবাহন এমনকি ডিঙ্গি নৌকা পর্যন্ত চলাচল করতে পারছে না। এতে সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষের বাড়ির উঠানে কাদাযুক্ত পানি থাকায় চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। কোনো কোনো এলাকায় কাচা রাস্তায় হাঁটুসম কাদার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রামীণ হাট-বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল আনা-নেওয়া করা যাচ্ছে না। দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হওয়ায় কৃষি ক্ষেত্রেও চরম অনিশ্চয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন উঁচু মাঠে পানি কমে গেলেও আবারও বন্যার পানি বৃদ্ধির আশঙ্কায় মাষকালাই ও খেসারিসহ মৌসুমি চাষাবাদ সম্ভব হচ্ছে না। দীর্ঘস্থায়ী এ বন্যায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে যমুনার চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় চরবাসীর দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। বন্যার পানি কম থাকায় ডিঙ্গি নৌকা চলাচল করতে না পারার কারণে হাঁটুসম পানির ভেতর দিয়ে দীর্ঘপথ পায়ে হেটে যেতে হচ্ছে চরবাসীদের। এছাড়াও গবাদি পশুপাখি নিয়ে বন্যায় মানবেতর জীবযাপন করছে সুবিধাবঞ্চিত চরের বাসিন্দারা। এছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলের শত শত শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে হাঁটুসম পানি পেরিয়ে ক্লাসে যেতে হচ্ছে। অনেক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার মাঠে বন্যার পানি জমে থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এ ব্যাপারে সোনাতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বলেন, বন্যার পানি কমলেও আবারও পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক নিচু এলাকা ও খালে পানি আটকে রয়েছে বিধায় মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। বদ্ধ পানিতে অনেক ঘরবাড়িই আটকে আছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের মানুষের একটু বেশি কষ্ট। অল্প পানি থাকায় পায়ে হেটেও যেতে পারছে না, আবার নৌকাও চলতে পারছে না। শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি অফিসার জেরিন আহমেদ বলেন, চলতি বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় উপজেলার কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। এ মৌসুমে খেসারি ও মাসকালাই চাষাবাদ হয়ে থাকে। দুগ্ধ প্রধান অঞ্চল হিসেবে শাহজাদপুরের খামারিরা এসব ঘাস গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু আবারও বন্যার আশঙ্কায় কৃষকরা চাষাবাদেও ঝুঁকি নিতে পারছে না।