অতিরিক্ত খরা ও বন্যায় পাট চাষে ক্ষতিগ্রস্ত আত্রাইয়ের কৃষক
প্রকাশ | ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর আত্রাইয়ে অতিরিক্ত খরা এবং হঠাৎ বন্যার কারণে বেশীর ভাগ পাট ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে চলতি মৌসুমে পাট চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার কৃষকরা। তবে পাট চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পাটের ন্যায্য মূল্যে পেলে কৃষকরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে বলছেন উপজেলা কৃষি অফিসার প্রসেনজিৎ তালুকদার।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, নব্বই জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে এক কেজি করে পাটের বীজ দেওয়া হয়েছিল। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২৫৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর বিপরীতে ২৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।
উপজেলার খনজর গ্রামের কৃষক আতিকুর রহমান বলেন, এ বছর পাট আবাদের শুরুর দিকে দেখা দেয় প্রচন্ড গরম ছিলনা কোন বৃষ্টি। এরপর পাট কিছুটা বড় হলে হঠাৎ বন্যা আসার কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লাভ ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনা করে অনেকে জমিতেই ফেলে রেখেছে পাট।
মিরাপুর গ্রামের কৃষক মহাসিন আলী বলেন, 'আমি বিনামূল্যে বীজ পেয়েছিলাম, পাটের ফলন ভালো হয়েছিল। কিন্তু বন্যা আসার কারণে পাটের গলা পর্যন্ত পানি উঠায় জমির সব পাট পচে গেছে। আমি কোন পাট কাটতেই পারিনি। এ বছর আমি পাট চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।'
জয়সাড়া গ্রামের কৃষক সিরাজ বলেন, 'আমি এ বছর দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। গত বছরের চেয়ে এ বছর পাটের ফলন কম হয়েছে। খরচ হয়েছে অনেক। গত চার দিন আগে পাট বিক্রি করেছি দুই হাজার ৬০০ টাকা মণ দামে। এত কম দামে পাট বিক্রি করলে লাভ তো দূরের কথা আবাদ করার খরচ উঠবে না।'
বাঁকা গ্রামের কৃষক শুকবর আলী বলেন, 'এলাকার আমিসহ অনেক কৃষক পাট চাষ করেছিল। কিন্তু আবাদের শুরুতে অনাবৃষ্টির এবং আবাদের মাঝামাঝিতে বন্যা হওয়ার কারণে পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারপরেও গত বছরের চেয়ে এবছর পাটের দামও অনেক কম। যদি কৃষক পাটের ন্যায্য মূল্য পেতো তাহলে তারা তাদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারত।'
এদিকে পাট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গুণগতমান ভেদে বাজারে পাটের দাম যাচ্ছে দুই হাজার ৬০০ থেকে তিন হাজার একশো টাকা মণ। তারা আরও বলেন, ব্যাংক থেকে প্রয়োজন মতো টাকা উত্তোলন করতে না পারায় পাটের দাম অনেক সময় কমবেশি হচ্ছে। তবে পাটের দাম আরো কমতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, 'এ বছর উপজেলায় পাট চাষিদের কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাজারে তিন হাজার ৩০০ থেকে তিন হাজার ৬০০ টাকা দামে কৃষক পাট বিক্রি করতে পারলে তাদের ক্ষতির কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবে বলে মনে করি।'