ফতুলস্নার বিসিকে ঝুট সেক্টর দখল নিতে বিএনপির দুই গ্রম্নপে সংঘর্ষ

প্রকাশ | ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের ফতুলস্নায় গার্মেন্টসের ঝুট সেক্টর দখল নিতে বিএনপির দুই গ্রম্নপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে করে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে উভয় গ্রম্নপের ৫/৬ জন আহত হয়েছেন। তবে গ্রম্নপের দুইজন গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফতুলস্নার শিল্পাঞ্চল বিসিক ২ নম্বর গলিতে বিএনপির দুই গ্রম্নপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর বিসিকের ঝুট সেক্টর দখল নিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেল মাহমুদসহ বিএনপির অনেক নেতার সন্ত্রাসী বাহিনী মরিয়া হয়ে ওঠে। পুরো বিসিক শিল্পনগরীতে বিভিন্ন গ্রম্নপের লোকজন প্রতিনিয়ত মহড়া দিয়ে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে তৎপর ছিল। বিশেষ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেল মাহমুদসহ তার বাহিনীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে বিসিকের ২নং গলিস্নসহ মার্টিন গলিস্নর সব কারখানার ঝুট সেক্টর দখল নেওয়ার চেষ্টা চালায়। এলাকাবাসী ও বিএনপি নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিসিকের ঝুট সেক্টর দখল নিতে একাধিক গ্রম্নপ তৎপর হয়ে ওঠে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড রোধ এবং বিসিক শিল্পনগরীতে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ফতুলস্না থানা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের পরামর্শে এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা বিসিকের মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা করেন এবং শৃঙ্খলভাবে যাতে গার্মেন্টের ঝুট বিক্রি হয় সেভাবে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কিছু সন্ত্রাসী এবং কয়েকজন দলের নেতা নেতাদের সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের ক্ষমতার প্রভাবে ঝুট সেক্টর দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তারই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর ওরফে বরিশাইল্যা জাহাঙ্গীরের লোকজন একটা একটা গার্মেন্টের ঝুট নামাতে গেলে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রাসেল বাহিনীর লোকজন বাধা দেয় এবং তাদের মারধর করে। পরে সংবাদ পেয়ে জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে লোকজন নিয়ে রাসেল বাহিনীর লোকদের ধাওয়া দেয়। পরে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় রাসেল বাহিনীর লোকজন জাহাঙ্গীর গ্রম্নপের দুজনকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় উভয় গ্রম্নপের আরো কয়েকজন আহত হন। আর দুই গ্রম্নপের লোকদের হাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করতে দেখায় মালিক শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তখন খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর কয়েকটি বাহিনী বিসিকে অবস্থান নিলে কৌশলে উভয় গ্রম্নপের লোকজন পালিয়ে যায়। রাসেল মাহমুদ বলেন, 'জাহাঙ্গীর তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমার লোকদের ওপর হামলা চালায়। আমার লোকজন প্রথমে কাউকে কিছু বলে নাই কিন্তু আমার লোকদের ওপর হামলা হওয়ায় শুধুমাত্র প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এলাকায় ছিলাম না সেই সুযোগে অস্ত্র নিয়ে আমার এলাকায় প্রবেশ করে তান্ডব চালানো হয়।' বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর জানান, 'আমার লোকজন একটা গার্মেন্টের ঝুট নামানোর জন্য মালিকের সঙ্গে কথা বলতে যায়। তখন রাসেলের সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন রাস্তায় আটকে দিয়ে মারধর করে এবং তাদের হাতে থাকা ছোড়া দিয়ে আঘাত করে। পরে সংবাদ পেয়ে আমরা লোকজন নিয়ে রাসেল বাহিনীর লোকদের ধাওয়া দিলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রাসেল একটা হত্যা মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে গেলেও তার হুকুমে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।' এ বিষয়ে ফতুলস্না মডেল থানার অফিসার (ইনচার্জ) ওসি নুরে আজম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত আছে। কোনো পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি।