হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মৃতু্য 'হাজারের' বেশি
প্রকাশ | ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
কোটা সংস্কার থেকে সরকার পতনের আন্দোলনে সহিংসতার সময় সারাদেশে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার তথ্য তুলে ধরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, সে সময় পুলিশের গুলিতে আহতদের মধ্যে চারশোর বেশি ব্যক্তি তাদের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকার রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে এসব তথ্য দেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘর্ষে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্যদের দেখতে এদিন কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে যান নূরজাহান বেগম। সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন আহত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন তিনি।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন আগস্টের শুরুতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিলে সারাদেশে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠলে সেসময় পুলিশ ও সরকারদলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট ঢাকামুখী লংমার্চের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপরও জ্বালাও-পোড়াও এর ঘটনার মধ্যে হতাহতের খবর আসে।
তবে সরকার পতনের আগে-পরে মিলিয়ে কতজন নিহত বা আহত হয়েছেন তা নিয়ে এখনও সরকারি ভাষ্য আসেনি। এর মধ্যেই স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আন্দোলনের সময় নিহত হওয়ার এ তথ্য দিলেন।
এদিন রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আহতদের দেখার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পুলিশের অনেক সদস্য আহত হয়ে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকে পায়ে, অনেকে মাথায় আঘাত পেয়েছেন।
তিনি বলেন, 'এ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে এক হাজারের ওপর নিহত হয়েছেন এবং ৪০০ এর ওপর ছাত্র-জনতা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। অনেকের এক চোখ অন্ধ হয়ে গেছে, অনেকে দুচোখেরই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।'
উপদেষ্টা বলেন, দৃষ্টিহীনদের চিকিৎসা দিতে 'সেবা ফাউন্ডেশেন' নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। যাদের চোখে সমস্যা হয়েছে তাদের তালিকা ওই প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, 'তারা বলেছে যত শিগগিরই সম্ভব চিকিৎসার জন্য দেশে ডাক্তার নিয়ে আসবে। ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও দিনাজপুরে তাদের চিকিৎসা হবে।'
নূরজাহান বেগম বলেন, 'অনেকে পায়ে আঘাত পেয়েছেন, অনেকের পা কেটে ফেলতে হয়েছে। আমরা বিভিন্ন দাতা সংস্থার সাথে কথা বলছি, বিশ্বব্যাংকের সাথেও আমাদের কথা হয়েছে। যাতে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে ডাক্তারদের টিম নিয়ে আসা যায়। সেটা নিয়ে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।'
এ সময় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক শেখ মো. রেজাউল হায়দারসহ চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।