তিন জেলায় সাবেক মন্ত্রী-এমপি'র নামে একাধিক মামলা
প্রকাশ | ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
তিন জেলায় সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও শিক্ষকসহ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে একাধিক মামলা করা হয়েছে। মেহেরপুরে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনসহ ১৬৩, সিলেটের গোলাপগঞ্জে ১১৮ এবং বেরোবির চার শিক্ষক ও দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, মেহেরপুরে সন্ত্রাস দমন আইনে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, ভগ্নিপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুল, ভাগ্নে তূর্য বিশ্বাস, সহযোগী সাবেক মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলুসহ ১৬৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। গত বুধবার মেহেরপুরের সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইবু্যনালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী রাশিদুল ইসলাম এ মামলা করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে ট্রাইবু্যনালের বিচারক মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মঞ্জুরুল ইমাম সদর থানার ওসিকে এফআইআরের নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শহরের বড়বাজার মোড় ও কলেজ মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রীর নির্দেশে আসামিরাসহ অজ্ঞাত আরও ৫০-৬০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সেখানে মাটর সাইকেলে মহড়া দেয়। ছাত্র ও উপস্থিত জনতাকে নানা হুমিক দেয়।
মামলার উলেস্নখযোগ্য আসামিরা হলেন বুড়িপোতা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহজামাল, শ্যামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি, বারাদি ইউপি চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল আনাম, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী, মেহেরপুর পৌর মেয়র মাহাফুজুর রহমান রিটন, আওয়ামী লীগ নেতা উপপ্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান হিরণ, মোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান, পৌর ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুলস্নাহ আল মামুনসহ নামীয় আসামি ১৬৩ জন।
গোলাপগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি জানান, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ-বিজিবি এবং সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে আরও দু'টি মামলা হয়েছে। শীলঘাট গ্রামের কয়ছর আহমদের ছেলে ছানি আহমদের (২২) পরিবারের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার রাতে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। নিহত ছানির বাবা কয়ছর আহমদ বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় ১১৮ জনের নাম উলেস্নখ করে মামলা করেন। মামলা নং-১২/১৪০। মামলার এজাহারে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী সংসদ সদস?্য নূরুল ইসলাম নাহিদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা সারওয়ার হোসেন, গোলাপগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম, বিয়ানীবাজার উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পলস্নব, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিনসহ ১১৮ জনের নাম উলেস্নখ করা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৮০-৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলা নিয়ে এখন পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নিহত ৭ জনের পরিবারের মধ্যে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় ৪টি হত্যা মামলা রেকর্ড হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর মোহাম্মদ আব্দুন নাসের।
এদিকে গত মঙ্গলবার সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ এ আরও একটি মামলা করেছেন উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের রায়গড় এলাকার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নিহত জয় আহমদের ভাই মনোয়ার মিয়া। সেখানে ১৬৩ জনের নাম উলেস্নখ করা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বেরোবি প্রতিনিধি জানান, রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত এবং আহতের ঘটনায় একাধিক মামলায় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) চার শিক্ষক ও দুই কর্মকর্তাকে আসামি মামলা করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
মামলার আসামি চার শিক্ষক হলেন, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিয়ার রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দুই শিক্ষক সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হক। দুই কর্মকর্তা হলেন সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমুলস্নার সাবেক পিএস ও অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার আমিনুর রহমান এবং প্রক্টর অফিসের সেকশন অফিসার রাফিউল হাসান।
গত ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ হত্যা ঘটনায় ১৮ আগস্ট শিক্ষক মশিয়ার রহমান ও আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ, প্রক্টর অফিসের সেকশন অফিসার রাফিউল হাসানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের বড় ভাই রমজান আলী।