সারিয়াকান্দির বিদ্যালয়গুলো চলছে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে
প্রকাশ | ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় অন্তত পাঁচ ডজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে দাপ্তরিক কাজ চালানো হচ্ছে। এমনিতেই এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট। এর মধ্যে একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়ায় এ সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এতে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসনিক কাজেও বাড়ছে জটিলতা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ৪৭টি। এরমধ্যে দুটি মাধ্যমিক, একটি উচ্চ মাধ্যমিকে প্রধান শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৬৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে ৬০টিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। এসব বিদ্যালয়ে আবার সহকারী শিক্ষক কম আছে ৫০ জন। সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে ওইসব বিদ্যালয় চালানো হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে প্রায়ই নানা দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে সহকারী শিক্ষক দিয়েই পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। তাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা ছুটিতে থাকলে সেদিনের পাঠদান প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
চরদলিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, 'আমি চাকরিতে যোগদান করার পরেই এখানকার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমাকে দায়িত্ব দিয়ে চলে যান। সেই থেকে আমি আর একজন সহকারী শিক্ষক মিলে বিদ্যালয় চালিয়ে আসছি। মাসে অন্তত ৫ কর্মদিবস উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে অথবা কোনো সভায় যোগ দিতে আমাকে উপজেলা সদরে যেতে হয়। তখন একজন শিক্ষক দিয়েই প্রাক প্রাথমিকসহ ছয়টি শ্রেণির শিক্ষার্থীর পাঠদান কার্যক্রম চলে। এবার একজন মাত্র সহকারী শিক্ষক এখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আবার আগের জন বদলি হওয়ায় সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। আমার এখানে শুধু প্রধান শিক্ষক না, সহকারী শিক্ষকেরও প্রয়োজন।' চরের স্থানীয় বাসিন্দা আমির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ ফাঁকা থাকলে শিক্ষা কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। অন্য পদে নিয়োগ চলছে। অথচ যেটা জরুরি সেই প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ হচ্ছে না।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সারিয়াকান্দির সভাপতি রমজান আলী বলেন, প্রধান শিক্ষক সংকটের কারণেই মূলত সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এতে বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকের সংকট তৈরি হয়। এতে সব ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয় না। এছাড়াও সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করলে অন্য সহকারী শিক্ষক তাকে সঠিকভাবে সহযোগিতা করেন না। অনেক ক্ষেত্রে দ্বন্দ্বেরও সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার প্রভাস চন্দ্র বলেন, নানা জটিলতার কারণে পদোন্নতি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সমস্যাটি প্রকট হয়েছে। যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য, তাদের একটি তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। ইউএনও তৌহিদুর রহমান বলেন, 'ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিষয়টি জানিয়েছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। আশা করি শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।'