রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের বাস প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। গত ১ জুলাই শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি কারণে বাস চলাচল বন্ধ করা হয়। পরে ১৬ জুলাই আবু সাঈদের নিহতের ঘটনায় রংপুরসহ সারাদেশ উত্তাল হয়ে উঠলে ওইদিন রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এদিকে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট আন্তঃবাহিনী সংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর ফের ১৮ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হলেও বাস এখনো চালু হয়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, বিভাগগুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কোনো না কোনো কাজে আসেন, আবার অনেক শিক্ষার্থী টিউশনিতে যান। এদিকে কর্মকর্তারা প্রতিদিন অফিস করলেও তাদের বাসও বন্ধ রয়েছে। এতে অনেক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী গোলাম রহমান শাওন বলেন, '১৮ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় ক্যাম্পাস খুলে দেয়। অনেকেই ক্যাম্পাসে আসেন। টিউশনি করেন। কিন্তু বাস না থাকায় তাদের বিপাকে পড়তে হয়। অটো ভাড়া দিয়ে যেতে হয়। আমরা চাই দ্রম্নত ভিসি নিয়োগ দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে বাস চালু করা হোক।'
লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী যুথি রানী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও বাস সার্ভিস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বেশ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বাস সার্ভিস না থাকায় অনেক শিক্ষার্থীকে বিকল্প পরিবহণ ব্যবহার করতে হচ্ছে, যা সময় এবং খরচ উভয় ক্ষেত্রেই বেশ কঠিন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে দ্রম্নত ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত যাতায়াত করতে পারে।
পরিবহণ পুলের উপ-রেজিস্ট্রার তাপস কুমার গোস্বামী বলেন, 'আমরা বাস চালু করার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু পরিবহণ পুলের পরিচালক নেই। কার নির্দেশে আমরা চালু করব। এখন ক্যাম্পাসে রেজিস্ট্রার ছাড়া কেউ নেই। আমাদের নির্দেশ দিলেই আমরা বাস চালু করব।'
রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, 'প্রশাসনে এখন কেউ নেই। আর কেউ আমাকে কোনো দায়িত্ব দিয়ে যায়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ হয়েছে। শিগগিরই ভিসি নিয়োগ দেওয়া হবে। ভিসি এলে সব সমস্যা কেটে যাবে।'