শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেন মৃধার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি জাতীয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা ও অতিথি আপ্যায়নের বিভিন্ন খরচের ভুয়া বিল ভাউচার করে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগে উলেস্নখ করা হয়।
তিনি ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। এরপর থেকেই তিনি প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক অবকাঠামোর জিনিসপত্র একাই কিনতেন। এতে ক্রয় কমিটির কোনো সহযোগিতা নিতেন না। বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাউচারে শিক্ষকদের কাছে স্বাক্ষর নিতেন বলে অভিযোগে জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৩-২৪ অর্থবছরের শুধুমাত্র ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে লাইটিং খরচ ১৬ হাজার ও আপ্যায়ন খরচ ৮ হাজার টাকার ভুয়া ভাউচার করে পুরো টাকা তুলেছেন ওই অধ্যক্ষ। তবে ২৬ মার্চ ও ১৭ মার্চ সে সময় রমজান মাস। সে সময় কীভাবে আপ্যায়ন করেছেন সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ডিজিটাল ব্যানার না বানিয়ে ও ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির জন্য ৪-৫শ' লিফলেট ছাপিয়ে বিল করেছেন ৬ হাজার লিফলেটের খরচ। বছরে দুইবার অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ বাজেট আসলেও এ প্রতিষ্ঠানে দৃশ্যত কোনো অনুষ্ঠান হয়নি। গেল ৭ মার্চে একটি গাঁধা ফুলের মালা দিয়েই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। এ বাবদ ভুয়া বিল ভাউচার করে উত্তোলন করা হয়েছে কয়েক লাখ টাকা। গত জুন মাসে বছরের দ্বিতীয় ধাপে ৫৭ হাজার টাকা বরাদ্দের টাকা আসলে বিভিন্ন ভুয়া ভাউচার তৈরি করে মালামাল ক্রয় দেখিয়ে পুরো টাকাই তিনি আত্মসাতৎ করেন। বিভিন্ন ভাউচারের স্বাক্ষর জোরপূর্বক নিতেন বলে দাবি ইন্সট্রাক্টরদের।
শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের হিসাব রক্ষক সেলিম রেজা বলেন, 'অধ্যক্ষ সাজ্জাদ স্যার ২৬ মার্চে কোনো লাইটিং করেননি। অথচ সেখানে লাইটিং খরচ বাবদ আমাকে দিয়ে একটি ভুয়া বিল তৈরি করিয়েছেন। আমাকে বেশিরভাগ সময় জোরজবরদস্তি করে কাজ করাতেন।'
কলেজের ইন্সট্রাক্টর (বাংলা) ছাইদুর রহমান সাগর বলেন, 'আমাদের প্রিন্সিপাল সবসময়ই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দিবসের খরচের নামে ভুয়া ভাউচার করেন। সেসব ভাউচারে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক ও হিসাবরক্ষকসহ অনেককে দিয়েই বাধ্যতামূলক স্বাক্ষর নেন। বিভিন্ন সময় আমাদের বেতন বেল আটকে রাখেন। তাই আমরা অধিদপ্তরে ডিজি'র কাছে অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি অচিরেই অভিযোগের তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেন মৃধা বলেন, 'আমি কোনো অনিয়ম করিনি। আমি সরকারি দিবসে যা যা ভাউচারে লিখেছি তাই খরচ করেছি। আপাততভাবে এখন আমি ওই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান কার্যক্রম করছি না।'