২৮ আগস্ট ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রশাসন উদ্বোধন দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন জেড ফোর্সের অধিনায়ক জিয়াউর রহমান স্বাধীন রৌমারীতে বেসামরিক প্রশাসনের উদ্বোধন করেন। দিনটিকে স্মরণে রাখতে এখানকার ৯ জন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম ফলকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়।
রৌমারী উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মো. মশিউর রহমান পলাশের নেতৃত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ, সদর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব রুহুল আমিন, সদর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আয়নাল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক মানিক উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফারুক আহমেদ বাবু, যাদুরচর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুমন রানাসহ অনেকে।
তৃতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের ডেল্টা কোম্পানির লেফটেন্যান্ট নূরুন্নবী খান তৎকালীন স্বাধীন রৌমারীর প্রতিরক্ষা কাজে নিয়োজিত ছিলেন। এ দিনটি সম্পর্কে তিনি তার লেখা 'রণাঙ্গনে রৌমারী' বইতে লিখেছেন- 'জিয়াউর রহমানের সময়োচিত পদক্ষেপের কারণেই রৌমারী থানা সদরটি পাকিস্তানি বাহিনীর দখল থেকে মুক্ত রাখা সম্ভব হয়েছিল। রৌমারী থানা সদরই ছিল মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের একমাত্র থানা সদর, যা দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর পদভারে একমুহূর্তের জন্যও কলঙ্কিত হয়নি।' তার নির্দেশেই লেফটেন্যান্ট নূরুন্নবীর নেতৃত্বে তৃতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের ডেল্টা কোম্পানিটি ১৯৭১ সালের ৬ আগস্ট রৌমারীর প্রতিরক্ষা কাজে নিয়োজিত হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ১১ আগস্ট থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বহুবার তিনি রৌমারী মুক্তাঞ্চল পরিদর্শনে এসেছিলেন। ২৮ আগস্ট তিনি রৌমারী মুক্তাঞ্চলে বাংলাদেশের প্রথম বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। রৌমারী মুক্তাঞ্চলে বাংলাদেশের প্রথম সামরিক প্রশিক্ষণ স্কুলের প্রতিষ্ঠায়ও তার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। রৌমারীর মুক্তমাটিতে বাংলাদেশের প্রথম ক্যান্টনমেন্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তারই নির্দেশে।
রৌমারী প্রতিরক্ষা কাজে একে একে তিনি জেড ফোর্সের তিনটি নিয়মিত ব্যাটালিয়নকেই সম্পৃক্ত করেছিলেন। রৌমারী সামরিক প্রশিক্ষণ স্কুলের কর্মকান্ডও তারই সক্রিয় সহযোগিতার কারণে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়েছিল। রৌমারী মুক্তাঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সামরিক প্রশিক্ষণ স্কুলের কর্মকান্ড এবং বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নিয়েও তাকে ভাবতে দেখা গেছে। তাকে প্রায়শই বলতে শোনা গেছে, 'রৌমারীতে এসে স্বাধীনতার স্বাদ পাই।' সত্যিকার অর্থেই তিনি রৌমারীকে ভালোবেসে ছিলেন। আর তাই রৌমারীকে তিনি যেকোনো মূল্যের বিনিময়েও দখলদার বাহিনীর পদভারে কলঙ্কিত হতে দেননি।