সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও থেমে নেই হরিণ শিকার

প্রকাশ | ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি
ফাঁদসহ নানা কৌশলে সুন্দরবনে প্রতিনিয়ত হরিণ শিকার করে আসছে চোরা শিকারিরা। এমনকি নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও থেমে নেই বনে প্রবেশ। এসব হরিণের মাংস আবার বন সংলগ্ন খুলনার দাকোপের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে। হরিণের পাশাপাশি ওই সব শিকারির কাছ থেকে রেহাই পাচ্ছে না অন্য বণ্যপ্রাণিও। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবনের কোলঘেষা উপজেলার সুতারখালী, কালাবগী, নলিয়ান, কালিনগর, কৈলাশগঞ্জ, রামনগর, বানিশান্তা, ঢাংমারী, খেজুরিয়া ও লাউডোব এলাকা রয়েছে। এসব এলাকা চিহ্নিত কয়েকটি হরিণ শিকারিচক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনে অবাধে ফাঁদসহ নানা কৌশলে হরিণ শিকার করে আসছে। বনবিভাগের প্রহরীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে চুরি করে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে অনেক লম্বা ফাঁদসহ নানা কৌশলে হরিণ শিকার করে তারা। তারপর খুব সহজেই লোকালয়ে নিয়ে আসে। পরে বিভিন্ন এলাকা থেকে অগ্রিম অর্ডার নেওয়া লোকজনের কাছে নগদ ও বাকিতে বিক্রি করছে। তবে দুর্নীতিবাজ দুই একজন কর্মকর্তা এসব কাজে সহযোগিতা করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। মাঝে মধ্যে বনবিভাগ ও কোস্টগার্ডের কাছে হরিণের মাংস ও চামড়াসহ এসব শিকারিচক্রের দুই একজন সদস্য ধরা পড়ে। কোনো কোনো সদস্য আবার পালিয়েও যায়। এতে কয়েকটি মামলা খেলেও কখনো থেমে নেই হরিণ শিকার। এমনকি জুন, জুলাই ও আগস্ট এই তিন মাস বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও থেমে নেই। এ ছাড়া স্থানীয় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা শিকারিচক্রের সদস্যদের কাছ থেকে ইচ্ছামতো হরিণের মাংসসহ নানা সুযোগ সুবিধা নিয়ে থাকে। ফলে হরিণ শিকার কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না বলে এলাকার সচেতন মহলের অভিযোগ। এমনিভাবে চোরা শিকারিদের সুন্দরবনে হরিণ নিধন চলতে থাকলে আগামীতে এ চিত্রল মায়াবী হরিণ বিলুপ্ত হতে পারে বলে ওই মহল মনে করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, চিহ্নিত হরিণ শিকারিচক্রের সদস্যরা প্রতি অমাবশ্যা ও পূর্নিমার গোনে বনে ঢুকে ফাঁদসহ নানা কৌশলে হরিণ শিকার করে থাকে। পরে এলাকায় এনে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে। এলাকার কোনো লোক মুখ খুললে কথিত প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের রোষানলে হয়রানির শিকার হতে হয় তাদের। শুধু হরিণ নয় এসব শিকারির হাত থেকে সজারুসহ বনের অন্য বণ্যপ্রািণও রেহাই পায় না। পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ.জেড.এম হাসানুর রহমান বলেন, জুন মাস হতে এ পর্যন্ত ১৩২ কেজি হরিণের মাংস জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় দু'টি মামলা দায়ের করা হয়। এ ছাড়া সোর্সের মাধ্যমে খবর নিয়ে চোরা শিকারিচক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আগাম ব্যবস্থাসহ আমাদের টহল অব্যাহত আছে।