ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি

সুশৃঙ্খল পরিবহণ ব্যবস্থা গড়তে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ

প্রকাশ | ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, বিশেষ প্রতিনিধি
সড়ক পরিবহণ সেক্টরের দীর্ঘদিনের নৈরাজ্য এবং চাঁদাবাজি বন্ধ করে একটি নিরাপদ এবং সুশৃঙ্খল পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি। ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির আহ্বানে অনুষ্ঠিত একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে সংগঠনের আহ্বায়ক মো. সাইফুল আলম এই প্রতিশ্রম্নতি দেন। এ সময় তিনি বলেন, 'সরকারের পাশাপাশি আমাদেরও সড়কে নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে।' প্রেস ব্রিফিংয়ের শুরুতে সাইফুল আলম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং আহতদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, 'শ্রদ্ধা জানাই সব ছাত্র-জনতাকে, যারা দেশের স্বার্থে স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং পরিবহণ সেক্টরের দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও স্বৈরাচারী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন।' ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির নতুন আহ্বায়ক কমিটির গঠন প্রসঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে, কীভাবে ২০০৮-২০২৪ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পরিবহণ সেক্টরে চাঁদাবাজি, দখল এবং অন্যান্য অনিয়ম চালু ছিল। এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে সাধারণ পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হন। দীর্ঘ সময় ধরে পরিবহণ মালিক সমিতির নেতৃত্বে থাকা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী চাঁদাবাজি এবং একক কর্তৃত্ব কায়েম করে রেখেছিল। তবে, ১৪ আগস্ট একটি তলবি সভায় সাধারণ পরিবহণ মালিকরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আদলে নতুন নেতৃত্ব স্থাপনের মাধ্যমে সেক্টরের অনিয়ম দূর করার সিদ্ধান্ত নেন। মো. সাইফুল আলমকে আহ্বায়ক করে একটি ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি পরিবহণ সেক্টরের স্বচ্ছতা এবং চাঁদাবাজিমুক্ত পরিবহণসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করবে।' আহ্বায়ক কমিটির প্রথম সভায় মো. সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি নিম্নলিখিত সাত দফা প্রস্তাব গ্রহণ করে: ১. যানবাহনে চাঁদাবাজি বন্ধ এবং যাত্রীবান্ধব পরিবহণসেবা নিশ্চিত করা। ২. সব বাস টার্মিনাল ও কোম্পানি চাঁদামুক্ত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ। ৩. যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও নিরাপদ সড়ক গড়তে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ। ৪. সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া। ৫. মালিক-শ্রমিক, প্রশাসন এবং ছাত্র-জনতাকে সম্পৃক্ত করে যাত্রীবান্ধব নিরাপদ সড়ক গড়ার জন্য টার্মিনাল ও অঞ্চলে কাউন্সেলিং এবং মোটিভেশন সভার আয়োজন। ৬. চাঁদামুক্ত, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা। ৭. গাড়ি পরিচালনার সুষ্ঠুতা নিশ্চিত করতে টার্মিনাল ও অঞ্চলভিত্তিক প্রকৃত মালিকদের নিয়ে কমিটি গঠন। আহ্বায়ক মো. সাইফুল আলম জানান, এই নতুন কমিটির লক্ষ্য শুধুমাত্র চাঁদাবাজিমুক্ত সড়ক গঠন নয়, বরং জনকল্যাণমূলক পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। সাইফুল আলম বলেন, 'আমরা বিগত দিনের অনিয়ম দূর করে জনবান্ধব পরিবহণ ব্যবসা গড়ে তুলতে চাই। সর্বোপরি, আধুনিক, নিরাপদ, ও বৈষম্যহীন পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আমাদের প্রতিশ্রম্নতি অপরিবর্তিত থাকবে।' ভুল তথ্যের প্রতিবাদে সাইফুল আলম উলেস্নখ করেন, কিছু গণমাধ্যমে, বিশেষ করে প্রথম আলোতে মির্জা আব্বাসকে ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির উপদেষ্টা হিসেবে জড়িত থাকার বিষয়ে ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, 'মির্জা আব্বাস ২০০১ সাল থেকে পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতির পদ ছেড়ে দিয়েছেন এবং এরপর থেকে তিনি সমিতির কোনো কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত নন।'