বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ হত্যাসহ বিভিন্ন থানায় হামলা-ভাঙচুর ও পুলিশ সদস্য হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে আ. লীগ নেতাসহ আসামি হয়েছে কয়েক হাজার মানুষকে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা মইজ্জ্যেরটে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন ও বাস ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাত ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় মামলা করেছে। গত রোববার কর্ণফুলী থানার এসআই মুহাম্মদ নূর ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি মো. জহির হোসেন।
সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার খবরে ওইদিন একটি বেআইনি সংঘবদ্ধ জনতা মিছিল সহকারে সিএমপির কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্জ্যেরটেক পুলিশ চেকপোস্ট ও ট্রাফিক পুলিশ বক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়াও চেকপোস্টে হামলা করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ চালিয়ে লুটপাটের মাধ্যমে সরকারি মালামাল ও যানবাহন চুরি করা হয়েছে। এতে ৪১ লাখ ৫০ হাজার টাকার লুণ্ঠন ও ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করেছে আনুমানিক আরও ৫ লাখ টাকার। ওসি জহির হোসেন বলেন, 'মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।'
কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিনিধি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট চাঁদপুরের কচুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামুনুর রশিদ সরকার (৫১) নিহতের ঘটনায় গায়েবি মামলা করা হয়েছে। গত সোমবার বিকালে এসআই দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে থানায় ওই মামলা করেন। এতে অজ্ঞাত ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। কচুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ওই দিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিক্ষুব্ধ জনতা কচুয়া থানায় হামলা চালায়। এ সময় থানার ওসিসহ অন্যরা পালিয়ে যাওয়ার সময় এসআই মামুনুর রশিদকে ৩০ থেকে ৪০ জন লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পাশের বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ মাঠে ফেলে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কচুয়া সরকারি হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে কুমিলস্নার দেবীদ্বার আবদুলস্নাহপুরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওসি মিজানুর বলেন, মামুনুরকে হত্যার ঘটনায় গত রোববার বিকালে কচুয়া থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন একটি মামলা করেছেন। মামলার বিবরণ থেকে পুলিশ জানা যায়, মামুনুরকে হত্যার পাশাপাশি একদল জনতা লাঠিসোঁটা ও দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে থানায় আক্রমণ করে। এ সময় থানার গাড়ি ভাঙচুর, অস্ত্র, গুলি ও মুঠোফোন লুট করা হয়। যার ক্ষতির পরিমাণ ১৫ লাখ টাকা। মামুনুরের স্ত্রী হাসিনা মমতাজ বলেন, 'আমার স্বামী কেমন ছিল, সবাই জানেন। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।'