দোয়ারাবাজারে অধ্যক্ষ অপসারণে বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় ১০ জন আহত
হবিগঞ্জে ৭ গ্রামের মানুষের দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত শতাধিক
প্রকাশ | ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
হবিগঞ্জে ৭ গ্রামের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছে শতাধিক ব্যক্তি। এদিকে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে অধ্যক্ষ অপসারণের বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় ১০ জন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর বাজারে পাওনা টাকা নিয়ে ৭ গ্রামের মানুষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ভয়াবহ সংঘর্ষে মিরপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্যকমপেস্নক্স ও হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার মিরপুর বাজারে টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে একই উপজেলার লামাতাসি গ্রামের আলফু মিয়ার সঙ্গে বানিয়াগাঁও গ্রামের জহুরুল মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে। পরে সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ে বানিয়াগাঁও ও লামাতাসি গ্রামের মানুষ। দেশীয় অস্ত্র, লাঠি-সোটা নিয়ে দুই গ্রামবাসী মিরপুর পয়েন্টে অবস্থান নেয় এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরবর্তীতে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হলে বানিয়াগাঁও গ্রামবাসীর সঙ্গে পশ্চিম জয়পুর ও লামাতাসির সঙ্গে পাশের আরও গ্রাম যোগ দেয়। সংঘর্ষ চলে রাত ১২টা পর্যন্ত।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফের উভয় পক্ষ মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় মিরপুর বাজার এলাকায় বন্ধ থাকে সব দোকানপাট। সড়কের উভয় পাশে আটকা পড়ে বহু যানবাহন। খবর পেয়ে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ বিষয়ে বাহুবল মডেল থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, পাওনা টাকা নিয়ে গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। কয়েক দফায় তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লিয়াকতগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ অপসারণসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলাকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার লিয়াকতগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, লিয়াকতগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল কাদিরের অপসারণসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে। মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা লিফলেট বিতরণের প্রস্তুতি নিলে বহিরাগত কয়েকজন ক্যাম্পাসে ঢুকে তাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে। এতে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ওইদিন দুপুরে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেয়। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আব্দুল কাদির বলেন, 'শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি প্রতিষ্ঠানে ছিলাম না।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার তনু বলেছেন, অধ্যক্ষের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখবে।