সরকার পতনের পর সারাদেশের ন্যায় নাটোরের গুরুদাসপুরেও বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। থানায় পুলিশ থাকলেও কর্মযজ্ঞ না চলায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে পুলিশ কর্মস্থলে ফিরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথ অভিযান পরিচালনা শুরু করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। গত ১৩ দিনে বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নিয়ে প্রতিকার চেয়ে গুরুদাসপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে ২৩৫ পরিবার। এদিকে বেশিরভাগ অভিযোগ যৌথ অভিযানে পুলিশ-সেনাবাহিনী সরেজমিনে সমাধান করার কারণে মামলার সংখ্যাও কমেছে অনেক। ২৩৫টি অভিযোগের মধ্যে ১৩ দিনে মামলা হয়েছে মাত্র পাঁচটি।
গুরুদাসপুর থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১২ আগস্ট থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত গুরুদাসপুর থানার ওসি ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কমান্ডার বরাবর লিখিত অভিযোগ এসেছে ২৩৫টি। এর মধ্যে জমি দখলের অভিযোগ দিয়েছেন ৬৫ জন। বাকিগুলো হামলা, ভাঙচুর, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন ঘটনায়। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ-সেনাবাহিনী যৌথভাবে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে প্রায় প্রতিটি অভিযোগ নিষ্পত্তি করেছে। জোড়পূর্বক দখল হওয়া জমির দলিল ও কাগজপত্র দেখে যার জমি তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নাজিরপুরের ব্যবসায়ী রজব আলী বেপারি জানান, 'সরকার পতনের পরদিন তার ৩৩ শতাংশ জায়গায় নির্মিত মার্কেটসহ জায়গা দখল করে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। পরবর্তীতে নিরুপায় হয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কমান্ডার ও থানার ওসি বরাবর প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। অভিযোগ দেওয়ার একদিন পরেই সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আমাদের দলিল দেখে প্রভাবশালীদের কাছ থেকে জায়গা উদ্ধার করে দেয়।'
গুরুদাসপুরে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার এরশাদ হোসেন বলেন, সোমবার তিনি গুরুদাসপুর থেকে বগুড়া গিয়েছেন। বর্তমানে নতুন অফিসার দায়িত্বে রয়েছে। তবে তিনি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় যে সব অভিযোগ থানায় এবং তাদের কাছে এসেছে তা সরেজমিন পরিদর্শন করে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে সমাধান করেছেন।'
গুরুদাসপুর থানার ওসি উজ্জ্বল হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে পুলিশের যৌথ অভিযানের কারণে উপজেলাব্যাপী এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। যে সব অভিযোগ থানায় এসেছে সেগুলো বেশিরভাগই সমাধান করা হয়েছে। যেগুলো মামলা হওয়ার মতো ঘটনা সেগুলো মামলাও হচ্ছে। জনগণকে সেবা দিতে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।'