শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

কোটচাঁদপুরে বাঁওড়ে চলছে মাছ লুটের মহোৎসব

কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
  ২৭ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
কোটচাঁদপুরে বাঁওড়ে চলছে মাছ লুটের মহোৎসব

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর কুশনা বাঁওড়ে চলছে মাছ লুটের মহা উৎসব। বাঁওড় ইজারাদাররা হিন্দু সম্প্রদায়ের হওয়ায় ভয়ে কারো বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। তারা বাঁওড়টি নিজেদের আয়ত্তে আনতে প্রশাসনসহ রাজনৈতিক নেতাদের কাছে গেলেও কোনো কাজ হয়নি।

কোটচাঁদপুর ফুলবাড়ী মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি প্রশান্ত কুমার জানান, সমিতির মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী কুশনা বাঁওড়টি বাংলা সন ১৪২৬ সালে সরকারের কাছ থেকে ৬ বছরের জন্য ইজারা নেন তারা, যার মেয়াদকাল ১৪৩১ সনের ৩০ চৈত্র মাস পর্যন্ত। কিন্তু বাঁওড়ে প্রচুর মাছ থাকা অবস্থায় ৬ আগস্ট সকাল থেকে প্রকাশ্যে মাছ লুট শুরু হয়, যা এখনো চলছে। তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসন, থানা এমনকি রাজনৈতিক নেতাদের কাছে গেলেও কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। এ পর্যন্ত ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার মাছ বাঁওড় থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এলাকাবাসীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে এলাকার কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় এলাকার সন্ত্রাসীরা মৎস্যজীবীদের বাঁওড় থেকে মাছ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। গত শুক্রবারে সকালেও মৎসজীবীদের নৌকা থেকে মাছ লুট করে, যার মূল্য আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা। বিষয়টি নিয়ে ওই বাঁওড়ের অদূরবর্তী আলুকদিয়া গ্রামের লিয়াকত আলীর (যিনি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক) বলেন, 'বিএনপির জেলা কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী যা করা প্রয়োজন তা আমরা করার চেষ্টা করেছি। বাঁওড়ের বিষয় নিয়ে কিছু জানি না। এখন পুলিশ প্রশাসন আছে তারাই বিষয়টি দেখবে। তাছাড়া বিএনপির কেউ এ কাজে জড়িত থাকলে প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' একই অবস্থা উপজেলার শিশারকুন্ডু টুলস্নু মিয়ার মাছ ভর্তি দীঘির। ৬ তারিখ থেকে মাছ লুট শুরু হয়। হাজার হাজার মানুষ ওই দীঘিতে জাল টেনে, হুইল দিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এভাবে চলে টানা ১৫ দিন। ২১ আগস্ট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওই দীঘির মালিক টুলস্নু মিয়া জানান, 'আমার দীঘিতে এখন আর মাছ খুব একটা নেই। মাছ লুট হওয়ায় ৪৫ থেকে ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ লুটের ঘটনার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক তদন্ত দাবি করছি।'

বিষয়টি নিয়ে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আলিমুল ইসলাম জানান, কুশনা বাঁওড়ের মাছ লুটের ঘটনার খবর পাওয়ামাত্র সেখানে পুলিশ গিয়েছিল। কিন্তু মাছ লুটকারীদের সেখানে পায়নি। তবে এ ব্যাপারে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে